

মুমিনুল হক আউট হয়ে গেলেন। সেঞ্চুরিটা পাওয়া হলো না তার। আক্ষেপ নিয়েই ড্রেসিংরুমের দিকে ফিরছিলেন তিনি। তখনো উইকেটে দাঁড়িয়ে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ফিফটি ছুঁয়েছেন; সেঞ্চুরিও পেতে পারতেন আরেকটা। ঠিক তখনই নতুন ব্যাটার হিসেবে আর কেউ তো এলোই না। উল্টো ড্রেসিংরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে ইনিংস ঘোষণার ডাক দিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মুমিনুলের পরই মাঠ ছাড়েন ৫৩ রানে অপরাজিত মুশফিক। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি রিকি পন্টিংয়ের পাশে বসার সুযোগ থাকলেও সেটা আর নেওয়া হয়নি তার। দলকেই এগিয়ে রাখলেন আরও একবার।
শততম টেস্ট ঘিরে মুশফিক বন্দনা চলছেই। ব্যাটেও দারুণ পারফর্ম করে যাচ্ছেন তিনি। প্রথম ইনিংসেই সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। সেই ছন্দ টেনে নিয়েছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসেও। ফিফটি পেরোনোর পর তার সামনে ছিল আরেকটি সেঞ্চুরি ছোঁয়ার সুযোগ। শততম টেস্টে সেঞ্চুরি পাওয়া ১১ ক্রিকেটারের মধ্যে দুই ইনিংসেই তিন অঙ্ক পেরোনো ইনিংস খেলা ব্যাটার একমাত্র পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তির পাশে বসতে পারবেন কি মুশফিক—সে প্রশ্ন যখন উঁকি দিচ্ছিল, তখন বিষয়টি মীমাংসিতই হলো নাজমুলের ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্তে।
টেস্টের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন তখন। বাংলাদেশের লিড এরই মধ্যে ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। উইকেটে মুমিনুল ও মুশফিক। সেঞ্চুরির কাছাকাছি থাকা মুমিনুলকে সময় দিতে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু ৮৭ রানে থামার পর আর ইনিংস দীর্ঘায়িত করেনি দল। মুশফিককেও তাই ফিফটিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো। সিদ্ধান্তটা কীভাবে নেওয়া, সেটা ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা দেন ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল। তিনি বলেন, ‘এটা একটা টিম গেম, ব্যক্তিগত চিন্তা করে না। যদিও আমি মনে করি যে, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স করলেই দলের পারফরম্যান্সটাও হয়। কিন্তু এমন একটা পরিস্থিতি ছিল (ইনিংসে) যে, আমাদের এরই মধ্যে ৫০০ রান হয়ে গিয়েছে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, আয়ারল্যান্ডের ১০টি উইকেট নিতে আমাদের যে ওভারটা ছিল সম্ভব।’ এমন ভাবনা থেকে ইনিংস ঘোষণা বলে জানান তিনি। তবে সময় বাড়ালেও খুব বেশি সমস্যা হতো না মনে করেন অনেকেই। আশরাফুলও এর সঙ্গে দ্বিমত নন, তবে তার কাছে স্পিরিট অব ক্রিকেটটাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ, ‘হ্যাঁ, আপনি চাইলে আরও এক ঘণ্টা খেলাতে পারতেন। কিন্তু আসলে জিনিসটা সুন্দর লাগবে না স্পিরিট অব ক্রিকেটে। হয়তো বা এ কারণেই আমাদের ম্যানেজমেন্ট চিন্তা করেছে যে না…যেহেতু মুমিনুল কাছাকাছি ছিল, তাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সে করতে পারেনি।’
মন্তব্য করুন