টি-টোয়েন্টি ২০২৪ বিশ্বকাপের আলোচিত ভেন্যু নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ আসরের শুরুর কয়েকদিন ক্রিকেটপ্রেমীদের দৃষ্টির কেন্দ্রে ছিল এ স্টেডিয়ামটি। নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের ইস্ট মিয়াডোতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়ারের বিশাল পার্কের একাংশে অস্থায়ীভাবে তৈরি স্টেডিয়ামটি নামের সঙ্গে আছে ইন্টারন্যাশনাল শব্দটিও। কিন্তু মাত্র ৪ মাসে তৈরি ৩৪ হাজার আসনের স্টেডিয়ামটি শেষমেশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেই বিশ্বকাপ শেষ না হতেই অস্থায়ী বিশাল অবকাঠামোর স্থাপনাটি সরিয়ে ফেরার কাজ শুরু হয়েছে ১২ জুন ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচ শেষ হতেই। সরেজমিন দেখা গেল, ১০৬ দিনের মধ্যে স্থাপনাটি সরিয়ে নিতে কাজ চলছে দ্রুতলয়ে। বিশাল বিশাল ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে স্টিলের ফ্রেমগুলো। আরেকদিকে ৮-১০টি ক্রেন লাগিয়ে খুলে ফেলা হচ্ছে ফ্রেমগুলো। একটি একটি করে চেয়ার খুলে ফেলার কাজও চলছে। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের ম্যাচে দর্শকের ঢেউ প্রেরণা জুগিয়েছে ২০২৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক আয়োজকদের। হাজার মাইল দূরে নিউইয়র্কে ক্রিকেট ইভেন্টটি আয়োজনের ইচ্ছা নিয়ে আলোচনাও শুরু করেছে তারা।
যদিও অস্থায়ী স্থাপনা, বানানোও হয়েছে অসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে। সে কারণেই কিছু ত্রুটি রেখেই স্টেডিয়ামটি যাত্রা শুরু করেছিল। মিডিয়া স্ট্যান্ড, হসপিটালিটি বক্স, ২০ মিটার উঁচু গ্যালারি থেকে দূরের ম্যানহাটন সিটি দেখার সুযোগের সঙ্গে
গ্যালারির এক কোনায় ছিল পার্টি কর্নার। এসবের সঙ্গেই ছিল বড়সড় দুটি ত্রুটি। এর মধ্যে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের পিচের নিম্নমান নিয়ে। ২০০০ মাইল দূরে ফ্লোরিডা প্রদেশ থেকে বানিয়ে আনা চারটি ড্রপ ইন পিচের অদ্ভুত আচরণে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। বিশ্বকাপের প্রথম ১২ দিনে নাসাউ স্টেডিয়ামের এমন পিচেই নির্ধারিত ছিল ভারত-পাকিস্তানের হাই ভোল্টেজ ম্যাচসহ ৮ ম্যাচ। আর এসব ম্যাচ শেষেই সবাই মিলে বিশ্বকাপে এমন পিচ রাখার সমালোচনা করেছেন ব্যাপক। কোনো বল নিচু হচ্ছে আর পরের বলটাই যাচ্ছে মাথার ওপর দিয়ে। আউটফিল্ডও ধীরগতির ছিল বলে অভিযোগ ছিল অনেক ক্রিকেটারের। বেশ কয়েকজন ব্যাটার ব্যথা পেয়ে ইনজুরির তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। জবাবদিহির মুখে পড়ে আইসিসি পিচের ত্রুটি ছিল বলে স্বীকার করে নেয়। সঙ্গে দায় এড়াতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়, আয়োজকদের সঙ্গে মিলেই এমন পিচ বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও উইকেটে এমন আচরণ নিয়ে তাদের কোনো ধারণা নেই। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম হলেও এখানে ছিল না ফ্লাড লাইটের ব্যবস্থা। বিশ্বকাপের ৮ ম্যাচের সবকটি হয়েছে দিনের আলোতে। বিস্ময়কর এমন কাজে আবহাওয়ার খেলায় বিঘ্নিত হয়েছে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচসহ আরও কয়েকটি ম্যাচ।
তবে এসব ভুল কাটিয়ে ক্রিকেটকে নিজেদের করে নিতে মরিয়া নিউইয়র্ক ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ। আর সেজন্যই আপাতত লক্ষ্য, তাদের অলিম্পিক ক্রিকেট আয়োজনে।