রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অবশেষে রাকসু নিয়ে মিলেছে স্বস্তির খবর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা ও আন্দোলনের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ঘিরে তৈরি হওয়া শঙ্কা অবশেষে কেটেছে। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আপাতত আন্দোলন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তে ১৬ অক্টোবরের নির্বাচনের পথ এখন অনেকটাই মসৃণ। সবকিছু মিলিয়ে প্রার্থী, নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্টরা এখন আশাবাদী— ভোট হবে উৎসবের আমেজে, আনন্দঘন পরিবেশে।

নির্দিষ্ট তারিখে রাকসু ভোট অনুষ্ঠানে সব জটিলতা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হচ্ছিল। বেশ কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে। অবশেষে মিলেছে স্বস্তির খবর।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে যেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা নতুন করে কোনো কর্মসূচি না দেন, তা নিয়ে তৎপর ছিল প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর ৫ অক্টোবর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়। সেখানে উপাচার্য নির্বাচনের আগে কর্মসূচি না দিতে অনুরোধ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম বলেন, প্রশাসন রাকসুর আগে কোনো কর্মসূচি না দিতে অনুরোধ করে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি ছিল, শিক্ষক ও ক্যাম্পাসের পুরোপুরি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের বিচার করা। প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে। এ জন্য রাকসু নির্বাচনের স্বার্থে আমাদের আপাতত কোনো কর্মসূচি নেই।

এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও রাকসু নির্বাচনের আগে কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন বলেন, আমরা রাকসু নির্বাচনের আগে আর কোনো কর্মসূচি দিচ্ছি না। এখন কর্মসূচি দিলে নির্বাচন আটকে গেলে তাহলে আমাদের দোষারোপ করা হবে। আমরা রাকসু নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করব। পূর্ণ সহযোগিতাও থাকবে।

শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নতুন করে কর্মসূচি না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা। ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন বলেন, রাকসু নির্বাচন নিয়ে একটা শঙ্কা ছিল। যদিও শিক্ষার্থীরা রাকসু আদায় করে নিত। কেউ যদি বানচালের ষড়যন্ত্রও করত, শিক্ষার্থীরা উৎখাত করত। শিক্ষার্থীদের মাঝে যে আমেজ তা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেবো না আমরা। ১৬ তারিখেই ভোট হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও রাকসু ভিপি প্রার্থী মুস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, শিক্ষক-কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমরা তাদের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। রাকসু সবার অধিকার, এটা সঠিক সময়ে হতেই হবে। শুরু থেকেই একটা গোষ্ঠী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে আসছে। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে আমরা আমাদের রাকসু আদায় করে নেব।

সার্বিক বিষয়ে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, রাকসু নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের কর্মসূচি দেবেন না বলে শিক্ষক-কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছেন। তারা নির্বাচনে পূর্ণ সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন। তাই নির্বাচন নিয়ে আর শঙ্কা দেখা যাচ্ছে না।

এর আগে সাত কর্মদিবসের মধ্যে দাবি আদায়ের আলটিমেটাম দিয়ে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি স্থগিত করেছিল অফিসার্স সমিতি। অন্যদিকে উপউপাচার্যসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির দাবি জানিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেছিল জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর অফিসার্স সমিতি ও পরদিন ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক ফোরাম কর্মসূচি স্থগিত করেছিল। মাঝে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ছিল। ৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর প্রশাসন শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফা বসে রাকসুর আগে আর কোনো কর্মসূচি না দেওয়ার আহ্বান জানায়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ১০ শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ২০ সেপ্টেম্বর জুবেরী ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তারা পোষ্য কোটা পুনর্বহাল এবং শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তির দাবিতে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করেন। তারপর তা অনির্দিষ্টকালের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে রূপ নেয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে জরুরি সিন্ডিকেট সভা হয়। সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপরও শিক্ষক-কর্মকর্তারা লাগাতার কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাকসু নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করতে বাধ্য হয় নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ অক্টোবর।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিমিউই-৬ সাবমেরিন কেবল প্রকল্পে নতুন পিডি জাকিরুল আলম 

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সম্ভাব্য সময় জানা গেল

ভোটকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে সড়কে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

ভূমিকম্পে জনমনের আতঙ্ক নিরসন ও মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা সভা

সরাসরি চুক্তিতে সিলেট যোগ দিলেন তারকা পেসার

কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিএনপির দুই দিনব্যাপী হেলথ ক্যাম্প

৩১ দফা বাস্তবায়নে যুবসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান আমিনুল হকের

শীতের শুরুতেই নিওরের স্কিনকেয়ার পণ্যের উচ্চ চাহিদা

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় শিবিরের দোয়া মাহফিল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩

১০

এশিয়ান টাউনস্কেপ পুরস্কার পেল রাজউক

১১

৭ ভূমিকম্পে কাঁপছে দেশ, কী চলছে মাটির নিচে

১২

রামেকে দেশের প্রথম সাপে কাটা ওয়ার্ড চালু, এক মাসে মৃত্যু শূন্য

১৩

নারী উদ্যোক্তা তনিকে মানহানি, গ্রেপ্তার আকাশ কারাগারে 

১৪

ভূমিকম্পের বৈজ্ঞানিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি

১৫

নিজের নির্বাচনী আসন ও দল নিয়ে যা জানালেন আসিফ মাহমুদ

১৬

শ্রীলঙ্কায় ভারি বৃষ্টিতে ভূমিধস-বন্যা, নিহত ৪০

১৭

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে মাউশির কঠোর নির্দেশনা

১৮

স্ত্রী ও দুই সন্তান হত্যায় মামলা, প্রধান আসামি কারাগারে

১৯

‎২২ ডিসেম্বরেই জকসু নির্বাচন চান জবি ছাত্র অধিকার পরিষদ

২০
X