ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:২৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কোলন ক্যান্সার

কারণ, লক্ষণ ও পরীক্ষা

কারণ, লক্ষণ ও পরীক্ষা

বয়স ৫০ পেরোলেই ঝুঁকি বাড়ে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার। এটি পরিপাকতন্ত্রের বৃহদান্ত্রের এক ধরনের টিউমার। রেকটাম আক্রান্ত হলে সেটাকে রেকটাল ক্যান্সার বলে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি প্রথমে নিরাপদ টিউমার যেমন পলিপ দিয়ে শুরু হয়। তারপর ধীরে ধীরে এডেনোমায় রূপান্তরিত হয়। এ এডেনোমাই পরে ক্যান্সারে রূপ নেয়।

প্রাথমিক অবস্থায় অধিকাংশ কোলন ক্যান্সারের কোনো উপসর্গ থাকে না। তাই অনেক রোগী সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শও নিতে আসে না। সাধারণত পশ্চিমা বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি হলেও এখন আমাদের দেশেও এর প্রকোপ বাড়ছে।

কখন হয়

বৃহদান্ত্রে যখন কোষ বিভাজনের নির্দিষ্ট ধারা ভেঙে যায় এবং কোষগুলো অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে তখন কোলন ক্যান্সার দেখা দেয়। বেশিরভাগ কোলন ক্যান্সারই বিভিন্ন ধরনের পলিপের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফল। প্রথমে বৃহদান্ত্রে ক্ষুদ্রাকার কোষীয় পিণ্ডে পলিপ তৈরি হয়। ধীরে ধীরে পলিপ থেকে ক্যান্সার হয় এবং তা দেহের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়ে সুস্থ টিস্যুকেও আক্রমণ করে।

কোলন ক্যান্সারের কারণ

পরিবেশ ও জিনগত কারণে বৃহদন্ত্র ও মলাশয়ে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। খাদ্যাভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত গরু বা ছাগলের মাংস খাওয়া, আঁশজাতীয় খাবার কম খাওয়া এবং ধূমপান-মদ্যপান এর আশঙ্কা বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজন হলেও এ রোগ হতে পারে।

বৃহদন্ত্র ও মলাশয় ক্যান্সার হওয়ার পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও রোগটি হতে পারে। বিশেষ করে মা, বাবা, ভাই কিংবা বোনের এ ক্যান্সার হওয়ার ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়ে। এ ছাড়া অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

লক্ষণ

তীব্র পেটব্যথা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবার উগড়ে আসা, মলের সঙ্গে রক্ত, ওজন কমতে থাকা, রক্তশূন্যতা ও জন্ডিস হওয়া।

এ ক্ষেত্রে রোগীর মলত্যাগের অভ্যাস বদলে যাবে। এ রোগ হলে কনসটিপেশন বাড়বে। অল্প অল্প করে হবে।

কখনো মিউকাস ডায়রিয়াও দেখা যায়। বিশেষ করে সকালের দিকে। পেটে ব্যথা, বমি ইত্যাদিও থাকতে পারে। পেটে চাকা বা টিউমারের উপস্থিতি ধরা পড়তে পারে। দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা ও খাবারের অরুচি হতে পারে। এ রোগ অন্য জায়গায়ও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত হতে পারে লিভার ও ফুসফুস।

রোগ নির্ণয়

স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় কোলন ক্যান্সার নির্ণয় করা সম্ভব। কোলনস্কোপি বা টিস্যুর বায়োপসি করেও এ রোগ সহজে শনাক্ত করা যায়।

রক্ত পরীক্ষায় কোলন ক্যান্সার ধরা না পড়লেও এ পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগীর অন্যসব তথ্য জানা যায়। যেমন রোগীর কিডনি বা লিভার ঠিকমতো কাজ করছে কি না, লোহিত রক্তকণিকা কমে আসছে কি না। রেড ব্লাড সেল কমে আসার মানে হলো কোলন ক্যান্সারের কারণে রোগীর ইন্টারনাল ব্লিডিং হচ্ছে।

কোলন ক্যান্সার কখনো কার্সিনোএমব্রায়োনিক অ্যান্টিজেন নামে একটি প্রোটিন তৈরি করে, যাকে সিইএও বলা হয়। রক্ত পরীক্ষায় সিইএর মাত্রা ট্র্যাক করা যায়। এতে বোঝা যায় যে চিকিৎসায় কাজ হচ্ছে কি না। আবার চিকিৎসার পর সিইএ রক্ত ​​পরীক্ষা করেই বোঝা যায় ক্যান্সার আবার ফিরে এলো কি না।

এরপর ক্যান্সারের ধাপ নির্ণয় করা হয়। ধাপ-০ হলো প্রাথমিক পর্যায়। ধাপ-৪-এর মানে হলো ক্যান্সার অন্য অঙ্গকেও (বিশেষ করে লিভার) আক্রান্ত করেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজধানী থেকে বগুড়া শহর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার

হেফাজতে ইসলাম সবার জন্য পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছে :  এ্যানি

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ

ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার উৎসর্গ করলেন মারিয়া

দেশের ৪০ শতাংশ নারী থাইরয়েডে আক্রান্ত!

‘এই পচা চালের ভাত কীভাবে খাব’

‘পুলিশ এখন বানরের মতো’ বললেন ওসি হাবিবুল্লাহ

ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে নামতে পারে আর্জেন্টিনা

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে একমাত্র পথ সুষ্ঠু নির্বাচন : নীরব

১০

যশোরের ৪ মহাসড়কে মহাদুর্ভোগ

১১

সুদের টাকা না পেয়ে ঘরের টিন কাঠ খুঁটি খুলে নিলেন ইমাম

১২

সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের মৃত্যুতে ঢাবি সাদা দলের শোক

১৩

কিউইদের কাছে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শোচনীয় পরাজয়

১৪

বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাসী : ব্যারিস্টার অসীম

১৫

প্রত্যেক উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিক : রুমিন ফারহানা

১৬

বিশ্বকাপ দলে ডাক পেলেন ঢাবি ছাত্রদল নেতা

১৭

ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হতে যাচ্ছে : প্রেস সচিব

১৮

ছুটির দিনেও জমজমাট চাকসুর নির্বাচনী প্রচার

১৯

কুমিল্লা নামেই বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তাল রাজপথ

২০
X