অভিনেত্রী রোজী সিদ্দিকী। থিয়েটারের মাধ্যমে অভিনয়ে পা রাখেন তিনি। এরপর একাধারে কাজ করেছেন নাটক, সিনেমা ও ওটিটিতে। তার অভিনীত অসংখ্য দর্শকপ্রিয় নাটক ও সিনেমা রয়েছে, যা তাকে এনে দিয়েছে তারকাখ্যাতি। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কারও। সবশেষ তাকে দেখা গেছে ‘তাণ্ডব’ ও ‘টগর’ সিনেমায়। কাজ ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে তিনি কথা বলেছেন কালবেলার সঙ্গে লিখেছেন এ এইচ মুরাদ
অভিনয়ের পাশাপাশি আপনার অসংখ্য গুণ রয়েছে। সেসব নিয়ে জানতে চাই...
আমার কোনো গুণ নেই। তবে যখন যে কাজটা করি, সে কাজটাই মন দিয়ে করার চেষ্টা করি। সেটি অভিনয় হোক অথবা ঘরের রান্না। কারণ আমি জানি মন দিয়ে কাজ না করলে কোনো কাজেরই কোয়ালিটি থাকে না। তাই গুণের থেকে মনোযোগটাই বেশি জরুরি।
সংসার, সন্তান ও ক্যারিয়ার—একসঙ্গে কীভাবে সামলেছেন?
এটা সহজ বিষয় নয়। তবে জীবনটাকে ডেইলি বেসিস লিড করি। আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করি না, অতীত নিয়েও ভাবি না। সবসময় বর্তমান নিয়ে চিন্তা করি। প্রতিদিন পরিবার এবং কাজ নিয়ে পরিকল্পনা থাকে। সে অনুযায়ী ঝামেলা মুক্ত জীবনযাপনের চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, অতীত এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অতিরিক্ত ভাবার কিছু নেই। কারণ অতীতে যা ঘটে গেছে আর ভবিষ্যতে যা ঘটবে—তার কোনো কিছুই আমাদের হাতে নেই। তাই বর্তমান যত ঝামেলা মুক্ত রেখে বাঁচা যায়, ততই ভালো।
বর্তমানে ছোট পর্দা ও বড় পর্দা মিলিয়ে কেমন ব্যস্ততা যাচ্ছে?
প্রচুর ব্যস্ততা যাচ্ছে। নতুন একটি সিনেমায় অভিনয় নিয়ে কথা হচ্ছে। এটা নিশ্চিত হলে তবেই জানাতে পারব। এ ছাড়া নাটকের প্রচুর চাপ যাচ্ছে। যেটি আমি খুব উপভোগ করছি। এভাবে আগে আমার নাটকের ব্যস্ততা যায়নি। আর মঞ্চ তো নিয়মিত করছি। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা অনেক।
মঞ্চ, নাটক ও চলচ্চিত্র তিন সেক্টরে কাজের বয়স কত হলো?
অনেক বছর। সেই নব্বই সাল থেকে শুরু। আমি মঞ্চ, টেলিভিশন অভিনয় তখন থেকেই শুরু করেছি। এরপর ৯২ সালে সিনেমায় অভিনয় করেছি। বলতে গেলে তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলছে।
বিনোদনের সব মাধ্যমেই কাজ করেছেন। কোন সেক্টরে কাজ করতে বেশি উপভোগ করেন?
এক কথায় থিয়েটার। এখানে আমি আমার অস্তিত্ব খুঁজে পাই। তাই থিয়েটারে হাঁটার সুযোগ পেলে আমি কখনোই না করি না। যত ব্যস্ততা থাকুক সব রেখে আমি মঞ্চে ছুটে আসি। এখানে ৩৪ বছর ধরে আমি অভিনয় করছি।
দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে অনেক নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছেন। নব্বই দশকের নির্মাতাদের সঙ্গে বর্তমান সময়ের পরিচালকদের মধ্যে কী ধরনের পার্থক্য লক্ষ করেন?
এটা ঠিক পার্থক্য নয়। আমার কাছে দুটি সময়ের আলাদা আলাদা মূল্যায়ন রয়েছে। তবে আমি বর্তমান সময়ের নির্মাতাদের নিয়ে গর্বিত। কারণ আমাদের তরুণ নির্মাতারা যেমন মেধাবী; তেমনই শিক্ষিত। চলচ্চিত্র সম্পর্কে তাদের অগাধ জ্ঞান রয়েছে, যা আমাকে মুগ্ধ করছে। তাই আমি বলব, পার্থক্য নয়; দুটি সময়ই আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিয়েছে।
‘তাণ্ডব’ সিনেমায় একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আপনি কি মনে করেন সিনেমায় এমন চরিত্রগুলোর গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়ানো উচিত?
এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশের নির্মাতারা শুধু নায়ক-নায়িকার চরিত্র নিয়ে ভাবেন। আমাদের মতো চরিত্র নিয়ে তাদের আগ্রহ কম; কিন্তু এসব চরিত্রই একটি সিনেমার মাধুর্য বাড়িয়ে দেয়, যা আমরা হলিউড-বলিউডের ক্ষেত্রে দেখি। সেখানে প্রধান চরিত্রের পাশাপাশি প্রতিটি চরিত্রকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা আমাদের এখানে নেই। তবে আমি আশা করব, দেশের নির্মাতারা ভবিষ্যতে নায়ক-নায়িকার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোর গুরুত্ব বুঝবেন। তাহলে দেশের সিনেমা আরও এগিয়ে যাবে বলে আমি আশাবাদী। এ ছাড়া ঈদে আমার অভিনীত ‘টগর’ নামে যে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছে, সেটি নতুনভাবে আরও অনেক সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে। সেখানে আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছি।
মন্তব্য করুন