দেশের তরুণদের প্রিয় লেখক, সাংবাদিক ও মানবিক গল্পকার রাহিতুল ইসলামের জন্মদিন আজ। তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিদিন যে বাংলাদেশ নতুন স্বপ্ন গড়ছে, সেই স্বপ্নবুননকারীদের গল্প তিনি সহজ কিন্তু মুগ্ধকর ভাষায় ফুটিয়ে তোলেন। তার লেখনী শুধু বিনোদন নয়, বরং আশার আলো ছড়ায় এবং অনুপ্রেরণার দিশা দেখায়।
সাংবাদিকতার তীক্ষ্ণ নজর আর সৃজনশীল লেখকের সংবেদনশীল মন- এই দুইয়ের অনন্য সমন্বয় দেখা যায় তার সৃষ্টিতে। দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক হিসেবে তিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অসংখ্য সাফল্যের গল্প খুঁজে এনে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের চ্যালেঞ্জ, কল সেন্টারের কর্মীর সংগ্রাম কিংবা চরের মাস্টারের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন- সবকিছুই তার লেখায় জীবন্ত হয়ে ওঠে। প্রতিটি লেখা যেন কেবল গল্প নয়, বরং একেকটি জীবনসংগ্রামের দলিল, যা পাঠককে নতুনভাবে ভাবতে ও অনুপ্রাণিত হতে শেখায়।
লেখালেখির দীর্ঘ পথচলায় তিনি ইতিমধ্যেই অর্জন করেছেন বিপুল পাঠকপ্রিয়তা ও একাধিক স্বীকৃতি। তার সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘আউটসোর্সিং ও ভালোবাসার গল্প’-এর জন্য তিনি ২০১৯ সালে লাভ করেন জাতীয় ফ্রিল্যান্সিং অ্যাওয়ার্ড। বইটি ফিলিপাইন থেকে ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার লেখনীর স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।
এরপর ‘কল সেন্টারের অপরাজিতা’ উপন্যাসের জন্য ২০২১ সালে পান এসবিএসপি সাহিত্য পুরস্কার। এছাড়া ‘বদলে দেওয়ার গান’, ‘বুকপকেট’, ‘চরের মাস্টার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার’, ‘হ্যালো ডাক্তার আপা’ এবং সর্বশেষ প্রকাশিত ‘সুখবর বাংলাদেশ’- সবগুলো বইয়ের ভেতরেই প্রতিফলিত হয়েছে ইতিবাচক ও স্বপ্নময় বাংলাদেশের মুখচ্ছবি।
রাহিতুল ইসলামের লেখনীর প্রধান শক্তি তার মানবিক আবেদন। তিনি প্রচলিত প্রেমকাহিনীর সীমা ছাড়িয়ে খুঁজে আনেন আমাদের চারপাশের সাধারণ মানুষের অসাধারণ হয়ে ওঠার উপাখ্যান। প্রযুক্তির হাত ধরে ভাগ্য বদলে দেওয়া তরুণ-তরুণী কিংবা প্রতিকূলতার মাঝেও যাদের চোখে অটুট স্বপ্ন- তারাই তার গল্পের আসল নায়ক-নায়িকা।
সামাজিক দায়বদ্ধতার দৃষ্টান্তও রেখে গেছেন রাহিতুল। ‘কল সেন্টারের অপরাজিতা’-র রয়্যালটি থেকে প্রাপ্ত অর্থ তিনি দান করেছেন প্রথম আলো ট্রাস্টে, যা পরে সহায় হয়েছিল দুজন অভাবী মানুষের জীবনে আশার আলো জ্বালাতে। তার গল্পের চরিত্রগুলো যদিও কাল্পনিক, তবু তারা যেন বাস্তবের প্রতিচ্ছবি- পাঠকের মনে জাগায় নতুন শক্তি, সাহস জোগায় আবারও স্বপ্ন দেখতে।
এই বিশেষ দিনে আমাদের প্রত্যাশা- রাহিতুল ইসলামের কলম এভাবেই বয়ে যাক মানুষের গল্প, সমাজের কথা আর বদলে যাওয়া বাংলাদেশের স্বপ্ন। তার লেখনী হোক আগামী প্রজন্মের জন্য অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস। শুভ জন্মদিন, রাহিতুল ইসলাম! আপনার কলমের শক্তি থাকুক অটুট, আর মানবিকতার আলো ছড়িয়ে যাক সর্বত্র।
মন্তব্য করুন