দীর্ঘদিন পর নতুন নাটক মঞ্চে নিয়ে এলো বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে বাঁশরী আয়োজিত ‘নজরুল নাট্য সমারোহ’ উৎসবে পরিবেশিত হয় উদীচীর নতুন নাটক ‘বিদ্যাভুতুম’।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত লেটো আঙ্গিকের এ নাটকটির নবনাট্যায়ন, গীত রচনা এবং নির্দেশনা দিয়েছেন উদীচীর সাবেক সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী।
সুপরিচিত অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী প্রবাদটির আলোকে রচিত হয়েছে লেটো নাট্য ‘বিদ্যাভুতুম’। এর কাহিনীতে দেখা যায়, গলা ফুলে যাওয়ায় শয্যাশায়ী রাজহাতির মূমূর্ষু অবস্থা। বিচলিত রাজা, বৈদ্যকে ডেকে আনলে তিনি দেখেন, হাতির গলায় খাবার আটকে আছে। বৈদ্য, শিষ্যসহযোগে মুগুর দিয়ে হাতির গলায় আঘাত করেন। খাবার বেরিয়ে গেলে হাতি সুস্থ হয়। রাজবৈদ্য শিষ্যকে বিদ্যাভুতুম উপাধি দেন। এরপর একদিন বিদ্যাভুতুমের কাছে এক বুড়ি আসে গলাফোলা রোগ নিয়ে। বিদ্যাভুতুম বুড়ির গলায় মুগুর দিয়ে আঘাত করলে বুড়ির মৃত্যু হয়। এ ঘটনা শুনে রাজা বিদ্যাভুতুমকে শাস্তি দেন।
নাটকটির নির্দেশক অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী বলেন, ১৯১০-১৯১২ সালের কোনো এক সময় কাজী নজরুল ইসলাম, আপন চাচা কাজী বজলে করিমের লেটোর দলে যোগ দেন। তখন তার বয়স ১১-১২ বছর। এরপর তিনি যোগ দেন ওস্তাদ শেখ চকোর গোদার দলে। এ সময় তিনি লেটো নাট্য ‘বিদ্যাভুতুম’ রচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যাভুতুম’ খুব সংক্ষিপ্ত একটি নাট্য। লেটো পরিবেশনাকালের আবহ তৈরি করার জন্য এর সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বন্দনা গীত ও তর্যা সংযোজন করা হয়েছে। পরিবেশনাকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। লেটো দলের সদস্যদের পরিবেশনাকালের আচার, আচরণকেও তুলে আনা হয়েছে। উদীচী চেষ্টা করেছে, ১৯১০-১৯১২ সালের শেখ চকোর দলের পরিবেশনা উপস্থাপন করতে।
উদীচীর বিদ্যাভুতুম নাটকের নেপথ্যে কাজ করেছেন প্রদীপ্ত অভিজিৎ পাল, আজাদ অনন্য, নাসির উদ্দীন রিপন, শেখ আনিসুর রহমান, কংকন নাগ, নাজমুল হক বাবু, মনোহর চন্দ্র দাস, জামিল উদ্দিন খান রতন, বিজন রায়, মিছবাহ ফারাজী, অমিত রঞ্জন দে, প্রবীর সরদার, রতন সিদ্দিকী, বিমল মজুমদার, ফারহিন আল মাসুদ দিঠি, বেনজীর আহমেদ লিয়া, রোকেয়া খানম, ফাহমিদা হক কলি, রেখা রানী গুণ।