২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার (০২ জুন) বিকেল ৩টায় নতুন অর্থবছরের এই বাজেট পেশ করেন তিনি।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক গতি ধরে রাখতে জ্বালানির পর্যাপ্ত এবং সাশ্রয়ী সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে আপাতত বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এবং অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সংসদ না থাকায় এবারের বাজেট রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বিভিন্ন বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হয়েছে। এর আগে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেট ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। সেই তুলনায় চলতি বছরের বাজেটের আকার কমেছে ৭ হাজার কোটি টাকা।
এর আগে সবশেষ জাতীয় সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছিল ২০০৮ সালে, যখন ক্ষমতায় ছিল সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তৎকালীন অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন।
জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের অধীনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ উপস্থাপন করলেন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম বাজেট।
দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১১ মাস পর প্রথমবারের মতো বাজেট উপস্থাপন করতে গিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ব্যয় কমিয়েছেন ৭ হাজার কোটি টাকা। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো অর্থবছরে বাজেটের আকার আগের বছরের তুলনায় ছোট হলো।
প্রায় দেড় দশক আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সালেহউদ্দিন আহমেদের জন্য এটাই প্রথম বাজেট উপস্থাপন করলেন। তিনি বলেন, বাস্তবতা বিবেচনায় রেখেই বাজেটের আকার সংকুচিত করা হয়েছে। ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
উল্লেখ্য, সংসদ না থাকায় আগামী ৩০ জুন রাষ্ট্রপতি বাজেট অধ্যাদেশে সই করবেন, ১ জুলাই কার্যকর হবে নতুন বাজেট। তবে বাজেটের অনেক অংশ, বিশেষ করে ট্যাক্স ও কাস্টমসসংক্রান্ত বিষয়গুলো ২ জুন উপস্থাপনের দিন থেকেই কার্যকর হবে।
মন্তব্য করুন