টানা তিন মাস স্থিতিশীল থাকার পর সেপ্টেম্বরে নেওয়া নতুন ঋণের ক্ষেত্রে ‘স্মার্ট (সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল- স্মার্ট) সুদহার করিডোর কিছুটা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেপ্টেম্বরের জন্য স্মার্ট সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। যা এর আগের মাস জুন, জুলাই ও আগস্টে ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। সদ্য শেষ হওয়া আগস্ট মাসের এ ‘স্মার্ট’ রেট রোববার ব্যাংকগুলোকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সেপ্টেম্বরে ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ হার হবে ১০ দশমিক ১৪ শতাংশ। এতে সেপ্টেম্বার মাসে নেওয়া ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ১৪ শতাংশ সুদ নিতে পারবে।
আইএমএফ-এর পরামর্শে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ থেকে সরিয়ে নিয়ে গত জুলাই থেকে ‘স্মার্ট’ রেট চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মুদ্রানীতিতে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিমাসের প্রথম কার্যদিবসে আগের মাসের জন্য প্রযেোজ্য ‘স্মার্ট’ রেট ঘোষণা করে জানিয়ে দিবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই নিয়ম অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বর আগস্ট মাসের ‘স্মার্ট’ রেট ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, ‘স্মার্ট’ রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ হারে মার্জিন বা সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে ব্যাংক। অন্যদিকে ৫ শতাংশ হারে মার্জিন যোগ করতে পারবে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)। মূল্যস্ফীতির উচ্চহারের রাশ টেনে ধরতে গত জুলাই মাস থেকে ‘স্মার্ট’ পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি অনেক দেশেই প্রত্যাশার চেয়েও কমে আসায় বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদদেরও তা অনুসরণ করার পরামর্শ ছিল। সেই নীতিতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও প্রত্যাশা করছে, আমানতে সুদহার বাড়লে আমানতকারীদের মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা কিছুটা সহজ হওয়ার প্রত্যাশাও রয়েছে। নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পর অনেক ব্যাংকেরেই আমানত সুদহার বাড়তে শুরু করেছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষি ও পল্লী ঋণের সুদহার সাধারণ ঋণের চেয়ে ১ শতাংশ কম হবে। সেক্ষেত্রে ‘স্মাট’ রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ মার্জিন যোগ হবে। এতে এ খাতের ঋণ সুদহার আগামী ছয় মাসের জন্য হবে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। অবশ্য কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাত ও ভোক্তা ঋণের আওতায় ব্যক্তিগত ঋণ ও গাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংক আরও এক শতাংশ সুপারভিশন চার্জ যোগ করতে পারবে, তবে তা শুধু বছরে একবারের বেশি হবে না।
নতুন সুদহার নির্ধারণের জন্য ব্যাংকগুলো স্থির বা পরিবর্তনশীল যে কোনো একটি নির্ধারণে গ্রাহকের সম্মতি অনুযায়ী হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থাৎ ব্যাংক চাইলে সর্বোচ্চ মার্জিনের মধ্যে যে কোনো একটি অঙ্কে সুদহার নির্ধারণ করে দিতে পারে।
মন্তব্য করুন