যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক কমানোর আলোচনায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় সবার শুভেচ্ছায় ভাসছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এবার তাকে নিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
শুক্রবার (১ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টার দিকে ওই পোস্টে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান লিখেছেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে শেখ বশিরউদ্দীনসহ কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করার দায়িত্ব পাই, সম্ভাব্য বাণিজ্য উপদেষ্টা পদে নিয়োগের জন্য। ফোনে তাকে ধরি ভোলায়, তখন তিনি একটি ব্যবসায়িক সফরে ছিলেন। পরে আমরা দেখা করি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে, আমার অফিসে। পূর্বপরিচয় না থাকলেও আমরা এক ঘণ্টা খোলামেলা কথা বলি।
‘শেখ বশিরউদ্দীন, আমাদের অসাধারণ বাণিজ্য উপদেষ্টা’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে জ্বালানি উপদেষ্টা লিখেন, ‘আমার অফিস থেকে যে নাশতা দেওয়া হয়েছিল, তিনি বিনয়ের সঙ্গে সেটি নেননি! তবে আমি তার মধ্যে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি, তা হলো দেশপ্রেম, যুক্তিহীন কোনো কিছু সহ্য না করার দৃঢ় মনোভাব, আর অনেক তথ্য একসঙ্গে গুছিয়ে বিশ্লেষণ করার অসাধারণ দক্ষতা। আমি আমার এই অনুভূতিগুলো প্রধান উপদেষ্টাকে জানাই।’
ফাওজুল কবির খান লিখেছেন, ‘আল্লাহর রহমতে, দেশ ও জাতির জন্যই বলা যায়, প্রধান উপদেষ্টা তাকে (শেখ বশিরউদ্দীন) দায়িত্ব দেন। আর তিনিও তা গ্রহণ করেন। দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যমূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় তিনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা) নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, সমালোচকদের হতাশ করে। আল্লাহ তাকে (বাণিজ্য উপদেষ্টা) হায়াতে তাইয়্যেবা দান করুন, যাতে তিনি দেশকে সেবা দিতে পারেন। হোক তা সরকারে বা বেসরকারি খাতে।’
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে নতুন এ হার ঘোষণা করা হয়। এরপরই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’
শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষ হওয়ার পর হোয়াইট হাউস থেকে স্টেটমেন্ট দিয়ে জানানো হয়- বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর আগে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল ৩৭ শতাংশ। পরে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়।’
প্রেস সচিব লেখেন, ‘আজ চূড়ান্ত আলোচনা শেষে শুল্ক ২০ শতাংশের ঘোষণা এলো। শুল্ক আলোচনায় বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।’
এর আগে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে শুক্রবার দেওয়া এক ঘোষণায় জানানো হয়, ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই ঘোষণায় আরও জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র একইসঙ্গে একাধিক দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এর মধ্যে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনের ওপর ২০ শতাংশ, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ এবং মিয়ানমারের ওপর সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন