স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশের শিশু-কিশোররা ব্যাংকিং সেবার আওতায় এসেছে। এবার তাদের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবাও উন্মুক্ত করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছাড়াই মোবাইলে আর্থিক সেবাদানকারী (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সের শিশু-কিশোররা। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়ে তোলা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রসারের অংশ হিসেবেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
এমএফএস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়েছে, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ' গড়ে তোলার জন্য 'ক্যাশলেস বাংলাদেশ' উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রসারে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী নবীনদের এমএফএস অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ দিয়ে নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, ১৪-১৮ বছর বয়সী নবীনরা এমএফএস হিসাব খুলতে পারবে। তবে, ১৪-১৮ বছর বয়সী হিসাব খুলতে আগ্রহী ব্যক্তি এবং অভিভাবক উভয়কেই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। এর পাশাপাশি অভিভাবকের জন্মসনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এন্ট্রি করতে হবে। হিসাব খোলার জন্য অভিভাবকের এমএফএস হিসাব বাধ্যতামূলকভাবে লিংকড এমএফএস অ্যাকাউন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হবে। তাই পিতা, মাতা, অভিভাবকের এমএফএস হিসাবের সত্যতা নিশ্চিত করে এ হিসাব খুলতে হবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবকের সম্মতি সাপেক্ষে এমএফএস হিসাব খুলতে হবে। হিসাব খোলার ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি গ্রহণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাদের মোবাইলে ওটিপি পাঠিয়ে সম্মতি নিতে হবে। এ ছাড়া এসব অ্যাকাউন্টসে লেনদেনের ক্ষেত্রে হিসাবধারীর মোবাইল নম্বরে মেসেজ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে লেনদেনের তথ্য অভিভাবককে জানাতে হবে এবং নিয়মিত মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এ ছাড়া, এসব এমএফএস হিসাবে শুধু অভিভাবকের লিংকড এমএফএস হিসাব, ব্যাংক হিসাব, কার্ড বা ই-ওয়ালেট হতে অর্থ জমা করা যাবে। তবে হিসাবগুলোতে এজেন্ট পয়েন্ট অথবা অন্য কোনো এমএফএস হিসাব, ব্যাংক হিসাব, কার্ড বা ই-ওয়ালেট থেকে অ্যাড মানি করা যাবে না। ক্যাশ-ইন বা অ্যাড মানি, ক্যাশ-আউট, পিটুপি, মোবাইল রিচার্জ, ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট, এডুকেশন ফি, মার্চেন্ট পেমেন্ট করতে পারবেন তারা।
তবে, দৈনিক সর্বোচ্চ ৫টা লেনদেনের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা এবং মাসে ১০ বার লেনদেন করা যাবে (সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা)। ক্যাশ আউট করা যাবে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫টা লেনদেনের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা এবং মাসে ১০ বার লেনদেন করা যাবে (সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা)। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির (পিটুপি) হিসাবে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫টা লেনদেনের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা এবং মাসে ১০ বার লেনদেন করা যাবে (সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা)। পরিষেবা ও এডুকেশন ফি দেওয়া যাবে দৈনিক সর্বোচ্চ ৩টা লেনদেনের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা এবং মাসে ১০ বার লেনদেন করা যাবে (সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা)।
এ ছাড়া এসব হিসাবে স্থিতি হবে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা। এসব হিসাব নিয়মিত মনিটরিংসহ প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
মন্তব্য করুন