প্রবাসীদের বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ বাড়ছে। এ খরচ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও খুব বেশি সুফল মেলেনি। ফলে প্রবাসীদের বাড়তি খরচ বহন করেই রেমিট্যান্স পাঠাতে হচ্ছে।
ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ গত এক বছরের ব্যবধানে কিছুটা কমলেও মোবাইল ব্যাংকিং ও ডাকঘরের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ বেড়েছে। তবে ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব মাধ্যমেই রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ বেড়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বুধবার (০৩ জানুয়ারি) রাতে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা খুব বেশি কমছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বরং আরও বেড়ে যাচ্ছে। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রতি ২০০ ডলারের জন্য খরচ হচ্ছে ২৯ শতাংশ। যা বৈশ্বিকভাবে রেমিট্যান্স পাঠাতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় এমন দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতি ২০০ ডলার রেমিট্যান্স ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠাতে খরচ হতো ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ খরচ হয়েছে। তবে ব্যাংকিং চ্যানেলে ওই পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে গড়ে খরচ হচ্ছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
একই সময়ের ব্যবধানে মোবাইল ফোন অপারেটরদের মাধ্যমে পাঠানোর খরচ ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ হয়েছে এবং ডাকঘরের মাধ্যমে পাঠানোর খরচ ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ৫২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এদিকে ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে রেমিট্যান্সের অর্থ স্থানান্তরের খরচও বেড়েছে। তবে বিভিন্ন ধরনের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কিছুটা কমেছে।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার গড়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ বাড়ছে। প্রতি ২০০ ডলার পাঠাতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে খরচ হতো ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। একই সময়ের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ হয়েছে। সৌদি আরব থেকে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ হয়েছে।
আইএমএফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রবাসীদের প্রতি ২০০ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠাতে গড় খরচ ৩ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার কথা। কিন্ত তা সম্ভব হয়নি। এ লক্ষ্যমাত্রা এখন বেড়ে ৫ শতাংশের বেশি রয়েছে।
গত অর্থবছরে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে বৈধ চ্যানেলে। এর বাইরে হুন্ডির মাধ্যমে আরও রেমিট্যান্স এসেছে।
মন্তব্য করুন