রাজধানীতে অভিনব এক চোরচক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা আদতে ছেলে হলেও নারী বেশে চুরি করেন, আবার সড়কে তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সেজে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে স্বর্ণ ও নগদ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মনির ওরফে প্রকাশ মণি (২৭) ও রফিক ওরফে প্রকাশ অপরূপা রূপা (২৮)।
মিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ছেলে হলেও চুরি করেন মেয়ে সেজে। আবার সড়কে চাঁদাবাজি করেন তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) সেজে। একটি চুরির মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ধূর্ত এই চক্রের নাম।
তিনি আরও বলেন, ২৭ আগস্ট মিরপুর মডেল থানার ৬০ ফিট এলাকার ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস থেকে আড়াই লাখ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, চুরি করেছেন এক মেয়ে। তদন্ত করে অভিযান চালিয়ে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন দেখা যায়, চোর মেয়ে নন, ছেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতেই মেয়ে সেজে চুরি করেন তারা।
মাথায় ঘোমটা, হাতে ছাতা!
সাধারণত শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিন হলেও রফিক ও মনিরের কাছে এই দুই দিনই কাজের দিন! কারণ এ সময় অফিস বন্ধ থাকে। তারা যে অফিসেই যায় সেখান ঢুকতেই মাথায় ঘোমটা দিয়ে ঢুকে! আবার রুমে ঢুকলে মাথায় ছাতাও ধরে! কারণ এসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকে। সেই ক্যামেরায় যাতে তাদের মুখ না আসে সে জন্যই এ পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা। যেখানেই চুরি করে সেখানেই সিসি ক্যামেরা ভেঙে দিয়ে আসে।
ঘরে রফিক, বাইরে রূপা!
আসল নাম রফিক। কিন্তু বাইরে তিনি পরিচয় দেন রূপা নামে! একইভাবে আরেকজনের নাম মনির। কিন্তু তিনি বাইরে পরিচিত মণি নামেই। তারা দুইজনই ছেলে হলেও বাইরে তারা কখনও তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে, আর কখনও মেয়ে হিসেবেই পরিচয় দিতেন!
প্রায় ৪ বছর ধরে তারা চুরি করছিলেন। এ পর্যন্ত শতাধিক চুরি করেছেন তারা। কিন্তু মেয়ে সেজে করার কারণে অধিকাংশ সময়ই তাদের শনাক্ত করা যায়নি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বিকেলে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ও ১ ভরি ৫ আনা স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দুটি করে মামলা রয়েছে।
মন্তব্য করুন