শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা বার্তা নিয়ে এসেছে মহালয়া। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও শ্রীমা আনন্দময়ী আশ্রমে মহালয়ার বিশেষ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ভোর সাড়ে ৫টায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের আবহ। প্রদীপ প্রজ্বালনের সঙ্গে সঙ্গে ধ্বনিত হয় উলুধ্বনি ও শঙ্খধ্বনি, আর ভক্তিমূলক সংগীত ও চণ্ডীপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দিরপ্রাঙ্গণ।
মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করেন শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও শ্রীমা আনন্দময়ী আশ্রম কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। তিনি বলেন, দেবী দুর্গার আগমনে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটবে এবং সমাজ, দেশ ও গোটা পৃথিবী মঙ্গলময় হয়ে উঠবে।
হিন্দু ধর্মের অন্যতম পবিত্র তিথি মহালয়া, যা পালিত হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যায়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে দুটি আধ্যাত্মিক দিক। প্রথমত, পিতৃতর্পণ ও শ্রাদ্ধ: এ দিনে হিন্দু সম্প্রদায় পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। বিশ্বাস করা হয়, মহালয়ার দিনে পিতৃপুরুষরা পৃথিবীতে এসে আশীর্বাদ দান করেন। দ্বিতীয়ত, দেবীপক্ষের সূচনা: পুরাণ মতে, দেবতাদের প্রার্থনায় মহাশক্তি দুর্গার আবাহন ঘটে মহিষাসুর বিনাশের জন্য। এভাবেই মহালয়া থেকেই শুরু হয় দুর্গোৎসবের মূল আবহ।
আধুনিক বাংলায় মহালয়ার ভোর মানেই রেডিও বা টেলিভিশনে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার, যা কোটি মানুষের হৃদয়ে নতুন আলো ও আশার সঞ্চার করে। রমনা কালীমন্দির থেকে প্রজ্বালিত মঙ্গল প্রদীপ শুধু দুর্গোৎসবের সূচনা নয়, এটি শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির আলোকবর্তিকা।
অপর্ণা রায় দাস বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, দেবী দুর্গার আবাহনে শুধু পূজা-পার্বণই নয়, সমাজে ন্যায়, সত্য ও মানবতার জয় ঘটবে। মহালয়ার আলো বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বকে মঙ্গলময় করুক।
এ সময় মন্দির কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি গৌরাঙ্গ সমাদ্দার, সহসভাপতি উত্তম সরকার, মিন্টু বসু, সুব্রত চন্দ্র দাস, মিঠুন দাস অজিত, অনিক সাহা তন্ময়, সুভাষ চন্দ্র দাস, সীমান্ত দাশ, সমীর সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন