

রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানায় সিংহীর খাঁচা থেকে বেরিয়ে পড়ার ঘটনায় দায়িত্বশীল এক কর্মচারীর গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্তে উঠে এসেছে, আবু বক্কর নামে ওই কর্মচারী সিংহীর খাঁচা লক করতে ভুলে গিয়েছিলেন।
ঘটনার দিন ৫ ডিসেম্বর জাতীয় চিড়িয়াখানার খাঁচা থেকে ‘ডেইজি’ নামের সিংহীটি বেরিয়ে পড়লে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির নেতৃত্ব দেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান। অপর সদস্য ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (খামার) মো. শরিফুল হক।
তারা গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
চিড়িয়াখানার পরিচালক রফিকুল ইসলাম শনিবার রাতে একটি গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি জেনেছেন তদন্ত প্রতিবেদন মহাপরিচালকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনো প্রতিবেদনটি হাতে পাননি তিনি।
তবে প্রাথমিকভাবে রফিকুল জানতে পেরেছেন, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে —স্থায়ী দৈনিক শ্রমিক আবু বক্কর সিংহীর খাঁচা বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে বরখাস্ত করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে একাধিক সুপারিশও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো নিরাপত্তা জোরদার করা। সুপারিশে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে যিনি খাঁচার দরজা বন্ধ করবেন, তার পাশাপাশি অন্য একজন কর্মচারী তা পরীক্ষা করে দেখবেন দরজাটি ঠিকভাবে লক হয়েছে কি না।
এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে জনবল বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মচারীদের জন্য নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় চিড়িয়াখানার বেশিরভাগ খাঁচা পুরোনো হওয়ায় সেগুলো সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।
গত ৫ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সিংহী ডেইজি খাঁচা থেকে বেরিয়ে পড়লে চিড়িয়াখানায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত দর্শনার্থীদের চিড়িয়াখানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
ঘটনার প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ‘ট্রানকুইলাইজার গান’ ব্যবহার করে সিংহীটিকে অচেতন করা হয়। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তাকে নিরাপদে আবার খাঁচায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন