

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি আয়োজন করেছেন একদল শিক্ষার্থী। এ সময় জনতাও অংশ নেয়।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে অবস্থিত ঘৃণাস্তম্ভে এ কর্মসূচি শুরু হয়। জুতা নিক্ষেপ করতে আসা লোকজন লক্ষ্যভেদ করলে তাদের পুরস্কার দিতে দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ঘৃণাস্তম্ভের পেছনের দেয়ালে বেশ কিছু ছবি লাগানো হয়েছে। এতে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদের ছবি, চৌধুরী মঈনুদ্দীন, অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনাকারী খাদিম হোসেন রাজা, পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে গোলাম আজমের বৈঠকের ছবি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আটক রাজাকার বাহিনীর ছবি রয়েছে।
কর্মসূচির আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭১ সালে যারা এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে আমরা আজ এ আয়োজন করেছি। পাকিস্তানি বাহিনী যে বর্বরতা করেছে, আমরা তা জাতির কাছে তুলে ধরতেই এ আয়োজন করি; যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভুলে না যায় পাকিস্তানিদের সেই কালো ইতিহাস।’
এর আগে ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ’-এ তিনি লেখেন, ‘আলবদর, আলশামস, রাজাকার ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসরদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রদর্শন ও জুতা নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত ‘ঘৃণা স্তম্ভ’। সবাই আজ দুপুর ১২টায় ডাকসু ক্যাফেটারিয়ার বিপরীত পাশে ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপের জন্য চলে আসুন। জুতা নিক্ষেপ করলেই রয়েছে বিশেষ 'গিফট হ্যাম্পার'।’
জুতা নিক্ষেপের পাশেই স্থাপন করা হয়েছে ‘নিঃশব্দ ঘৃণা’ নামে একটি বোর্ড, যেখানে অনেকে ঘৃণাসূচক বিভিন্ন বাক্য লিখেছেন।
সেখানে শিক্ষার্থীরা লিখেছেন, ‘একাত্তরের রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘গণহত্যার সমর্থকরা কীভাবে রাজনীতি করে’, ‘রাজাকারের বাচ্চারা এ যুগের কুলাঙ্গার’, ‘রাজাকার ইতিহাসের সর্বোচ্চ নিকৃষ্ট ইতর প্রাণী’।
জুতা নিক্ষেপ করতে আসা প্রবীণ সুফি হাশিম বলেন, ‘আমি চরম মাত্রায় ঘৃণা করি, যারা এ দেশের এই মূল্যবান সম্পদগুলোকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমি মনে করি না তারা মুসলমান; তারা পাখির মতো মানুষ মারছে।’
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে ছাত্র ইউনিয়নের কলা ভবন শাখার সভাপতি সাদিকুর রহমান ও তৎ কালীন উর্দু ও ফারসি বিভাগের ছাত্র আবু তৈয়ব হাবিলদার স্তম্ভটি নির্মাণ করেন। পরদিন ১৬ ডিসেম্বর এ কে খন্দকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের কয়েকজন সেক্টর কমান্ডার স্তম্ভটি উদ্বোধন করেন। ২০০৮ সালে স্তম্ভটি ভেঙে ফেলা হলে পরে তা পুনর্নির্মাণ করা হয়।
মন্তব্য করুন