প্রতিদিন সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসার পথে শত শত মুরগি মারা যায়। মরে যাওয়ার পরও এসব মুরগি ফেলে দেওয়া হয় না। প্রশ্ন হলো তাহলে এসব মুরগি কি করা হয়?
মরা মুরগি সংগ্রহকারীরা বলছেন, মাছের খামারিদের কাছে তারা এসব মুরগি বিক্রি করেন। তবে পাইকারি মুরগির বাজারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব মরা মুরগি বিভিন্ন খাবারের হোটেল চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে সরবরাহ করা হয়।
জানা যায়, মুরগির আড়তগুলোর সামনে একটি নির্দিষ্ট প্লাস্টিকের ড্রাম থাকে। মরা মুরগিগুলো সেখানে ফেলা হয়। এরপর ময়লার ট্রলি তা নিয়ে ড্রাস্টবিনের পাশে রাখে। তখনই ঘটে আসল ঘটনা। রাত গভীর হলে এসব মরা মুরগি প্লাস্টিকের নীল ড্রামে ভরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেগুলো জবাই করে বিভিন্ন হোটেলে সাপ্লাই দেওয়া হয়।
গত ৮ মে ঘটেছে এ রকম একটি ঘটনা। কাপাসিয়া থেকে মরা মুরগি ভর্তি একটি পিকআপ যাচ্ছিল গাজীপুর শহরে। গন্ধ পেয়ে গাড়িটি আটক করেন স্থানীয়রা। এরপর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে মরা মুরগি ভর্তি পিকআপ জব্দ করে নিয়ে যায় কাপাসিয়া থানা পুলিশ।
পরবর্তীতে কাপাসিয়া উপজেলার ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি টিম জব্দকৃত মুরগিগুলো মাটিচাপা দেন ও পাশাপাশি গাড়ির চালককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
ওই পিকআপচালক জানান, গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে মরা মুরগি নিয়ে তিনি বোর্ডবাজারে পৌঁছে দেন। সেখানে পৌঁছে দেওয়ার পর মুরগিগুলো কী করা হয় তা তিনি জানেন না।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর ৯ মে অভিযানে নামে কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসন। বিকেলে মরা মুরগি বিক্রির দায়ে উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে এক ব্যবসায়ীকে ৭ দিনের বিনাশ্রম জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে ৮০ কেজি মরা মুরগির মাংস জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন মুরগির মার্কেটে কতিপয় কর্মচারীর সহযোগিতায় একশ্রেণির প্রতারক এসব মরা মুরগি সংগ্রহ করে ব্যবসা করছেন। দেশে মাছ মাংসসহ ভোজ্য দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ এসব খাবার অযোগ্য মরা মুরগির ব্যবসায় নিয়োজিত রয়েছে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এসব মরা মুরগির মাংস খেলে মানুষের পেটে পীড়াসহ নানা ধরনের দুরারোগ্য রোগ হতে পারে।
মন্তব্য করুন