রাজধানীর আদাবর থানার শ্যামলী হাউজিং দ্বিতীয় প্রকল্প এলাকায় গভীর রাতে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘুমে থাকা বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে একজনের মৃত্যু হয়। অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সোমবার দিবাগত রাত সাড় ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তখন সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আদাবর থানার শ্যামলী হাউজিং বেড়িবাঁধের ওপরে একটি পুরোনো সিলিন্ডার পড়ে আছে। এখনো গ্যাস ছড়াচ্ছে। সিলিন্ডারের কাছাকাছি যেতেই নাকে একটি তীব্র গন্ধ আসছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেড়িবাঁধের ওপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কালুর ভাঙারির দোকানে এই সিলিন্ডারটি ভাঙার সময় হঠাৎ গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশপাশের টিনশেড বাসায় ঘুমিয়ে থাকা অর্ধশত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন স্মার্ট টেকনোলজির গ্যারেজ ম্যানেজার আবুল হাশেম। তিনি বলেন, শ্যামলী হাউজিং দ্বিতীয় প্রকল্পের বেড়িবাঁধের পাশেই স্মার্ট টেকনোলজির গাড়ির গ্যারেজ ও পরিবহন কর্মীদের থাকার স্থান। এখানে অন্তত ২৫ জন লোক বিভিন্ন রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। আমিও গ্যারেজে আসা গাড়ির হিসাব-নিকাশ করে ঘুমিয়ে যাই। রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ বিষাক্ত গ্যাসের গন্ধে ঘুমের মধ্যেই অসুস্থতা বোধ করি। দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে দেখি অনেকেই আমার মতো ছটফট করছেন। কেউ দৌড়ে রাস্তায় বের হয়েছেন। কেউ রুমের সামনেই অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি অফিসে বিষয়টি জানানোর পরে কয়েকজন এসে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে অক্সিজেন নিয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে আমি চলে এসেছি। তবে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে একজন মারা গেছেন। নিহতের নাম মো. কবির হোসেন। সে স্মার্ট টেকনোলজির কর্মী রুহুল আমিনের চাচাতো ভাই। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। আর গুরুতর আহতরা হলেন- রুহুল আমিন, রাকিব, ওয়াদুদ, মন্নান, সিরাজ, জাহিদ, রাহিম, মেহেদী ও রকি। তারা স্মার্ট টেকনোলজির কর্মী।
এ ছাড়াও স্থানীয় অনেকে অসুস্থ হয়েছেন। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
স্মার্ট টেকনোলজি গ্যারেজের নিরাপত্তা কর্মীর বরাত দিয়ে আবুল হাশেম আরও বলেন, বেড়িবাঁধের উপরে ভাঙারি দোকান আছে। ওখানে রাতেও কাজ চলছিলো। আমাদের রাতের নিরাপত্তা কর্মী দেখেছে একটি ট্রাকে করে ভাঙ্গারি আনা হয়। এই ট্রাক চলে যাওয়ার কিছু সময় পরই এই গ্যাস ছড়াতে থাকে। তখন দোকানের লোকজন সব ফেলে পালিয়ে যায়।
এ দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, এখানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। অসুস্থদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজন নিহতের খবর পেয়েছি। সিলিন্ডারে কি ধরনের গ্যাস রয়েছে সেটি জানতে সিআইডিকে খবর দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একটি ভাঙারি দোকানের সবাই পলাতক। আমরা কাজ করছি।
মন্তব্য করুন