বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের অভিনয়ের প্রশংসা না করে পারা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনে বিদেশ থেকে উসকানি দেওয়া হলো। উসকানি পেয়ে মির্জা ফখরুল বলল এই আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি আছে, সরকার উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। গতকাল তিনিই বলেছেন, আন্দোলনে আমরা নাই। আমরা সমর্থন দিয়েছি কিন্তু সম্পৃক্ত হয় নাই। এত বড় অভিনেতা আমার রাজনীতির অঙ্গনে আমি দেখি নাই। মির্জা ফখরুলের এই অভিনয়ের প্রশংসা না করে পারা যায় না।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দ্বি-চারিতার রাজনীতি বাংলাদেশে বন্ধ করতে হবে, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। সমগ্র পৃথিবীতে বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে এই ধ্বংসযজ্ঞ, হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করা হলো, মানবিক বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলো। এতো রক্তপাত, এতো মানুষের হতাহতের ঘটনা আমরা কখনো দেখি নাই। একজন দারোয়ান তার বাসার দরজা খুলে দেয় নি বলে পরবর্তীতে তাকে টেনেহিঁচড়ে বের করে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একজন নারী সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেছেন, তাকে ধরে নিয়ে বিবস্ত্র করা হয়েছে, তার মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন নারীকে সবার সামনে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে। এই দৃশ্যটা আমরা দেখলাম। ১৯৭১ সালে আলবদর, আল শামস, রাজাকারদের যে কাহিনি আমরা শুনেছি, সেই একই দৃশ্য আমরা দেখলাম ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায়।
নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখানে শ্রমিক যারা আছেন তাদেরও অনেক দাবি দাওয়া আছে। স্কপের পাঁচ দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন আপনাদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়েছিলাম। সকল রাজনৈতিক দল এক হয়ে শ্রমিকদের ওই আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। কিন্তু সে শ্রমিক আন্দোলন কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়নি, পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ করেনি। সেটা একটি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন ছিল। ছাত্রজীবনে আমাদেরও দাবি ছিল। আমরা সচিবালয় ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করেছি। শিক্ষামন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করেছি। কিন্তু কখনও ঢুকে আক্রমণ করিনি।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার কারফিউ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে আনন্দিত করেছে। কারফিউ জারি করার পর স্বাভাবিক অবস্থা আস্তে আস্তে ফিরে আসতে শুরু করেছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে আমি ধন্যবাদ জানাব। কারণ আপনারা বাংলাদেশের লাইফ লাইন এ চট্টগ্রাম বন্দরকে এক মিনিটের জন্যও বিচ্ছিন্ন হতে দেননি। করোনা মহামারির সময়ও চট্টগ্রাম বন্দর পরিবারেরও অর্ধশতাধিক মানুষ জীবন দিয়েছে। তবুও বন্দর বন্ধ হয়নি।
এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত প্রায় ৭ হাজার শ্রমিকের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। শ্রমিকদের খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি অতীতেও করোনাকালীনসহ বিভিন্ন সময়ে সাহায্যে করে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর।
এতে উপস্থিত ছিলেন, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়াল এডমির্যাল এম সোহায়েল, বন্দর সচিব ওমর ফারুক, প্রশাসন ও পরিকল্পনা (বন্দর) মো. হাবীবুর রহমান, সদস্য (অর্থ) শহীদুল আলম, সদস্য (মেরিন) কমোডর ফজলার রহমান, সদস্য (প্রকৌশল) কাউসার রশিদ, সাইফ পাওয়ারটেক এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর তরফদার রুহুল সাইফ, বার্থ অপারেটর এসোশিয়েশন এর সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন