আহমেদ এরশাদ খোকন, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৩, ০৬:১৬ পিএম
আপডেট : ১৯ জুন ২০২৩, ০৯:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

চা শ্রমিক উপলক্ষ্মীর দেশসেরা হওয়ার গল্প

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কাছ থেকে দেশসেরা চা পাতা চয়নকারীর পুরস্কার নিচ্ছেন চা শ্রমিক উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা। ছবি : কালবেলা
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কাছ থেকে দেশসেরা চা পাতা চয়নকারীর পুরস্কার নিচ্ছেন চা শ্রমিক উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা। ছবি : কালবেলা

মা-বাবার হাত ধরেই মূলত চা গাছের সঙ্গে প্রথম সখ্য। ৯ বছর বয়স থেকে তিনি একজন পেশাদার চা শ্রমিক। মা-বাবাসহ পূর্বসূরিদের বংশপরম্পরায় চা পাতা উত্তোলন কাজে তিনিও জড়িয়ে পড়েন। বলছি উপলক্ষ্মী ত্রিপুরার কথা।

১৯৭৮ সালে ফটিকছড়ির নারায়ণহাট ইউনিয়নের নেপচুন চা বাগানের শ্রমিক পল্লিতে জন্ম নেওয়া উপলক্ষ্মীর জীবন বিরাট সংগ্রামের। একজন চা শ্রমিক হয়েও তিনি এখন দেশজুড়ে পরিচিত নারী। জাতীয় পদক উঠেছে তাঁর হাতে। ১৯৮৭ সাল থেকে যে চা পাতার সঙ্গে উপলক্ষ্মী ত্রিপুরার মিতালি, সেই চা পাতা উত্তোলন (চয়নকারী) করে পেয়েছেন দেশসেরা চয়নকারীর পুরস্কার।

গত এক বছরে চা পাতা চয়নের রেকর্ডে ঘণ্টায় প্রায় ৭৮ কেজি পাতা উত্তোলন বা চয়ন করার সক্ষমতা দেখিয়েছেন উপলক্ষ্মী। এর স্বীকৃতি স্বরূপ সম্প্রতি বাংলাদেশ চা বোর্ডের পক্ষ থেকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

সাধারণ একজন চা শ্রমিক দেশসেরা হওয়ার গল্প জানতে উপজেলার নারায়ণহাট ইউনিয়নের নেপচুন চা বাগানের ১৩ নম্বর ব্লকে গেলে উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা কালবেলাকে বলেন, পুরস্কারের আশায় কাজ করিনি। জীবনের অংশ হিসেবে নিজের কর্মকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করেছি। আজ আমার কাজের মূল্যায়ন পেয়েছি। ভালো লাগছে, পুরস্কার পেয়েও এক দিনের জন্য চা পাতা উত্তোলন বন্ধ করিনি।

তিনি আরও বলেন, আমি পড়ালেখা করিনি। আমার জন্ম, বড় হওয়া, বিয়ে, সন্তানাদির জন্ম সবই এ নেপচুন চা বাগানে। ৯ বছর বয়স থেকে চা পাতা উত্তোলন কাজে সম্পৃক্ত হয়েছি, কাজ করতে করতে দ্রুত পাতা সংগ্রহ শিখেছি।

এক বছরে ২৮ হাজার ৩৪৪ কেজি চা পাতা উত্তোলন করার রেকর্ড রয়েছে উপলক্ষ্মীর, যা তাঁকে জাতীয় চা পুরস্কার পাইয়ে দিয়েছে। পুরস্কার হিসেবে এক ভরি ওজনের সোনার ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়েছে। ৮ ক্যাটাগরিতে দেওয়া পুরস্কারের মধ্যে একমাত্র চা শ্রমিক হিসেবে ‘শ্রেষ্ঠ চা-পাতা চয়নকারীর সম্মাননা’ পেয়েছেন ফটিকছড়ির উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা।

উপলক্ষ্মীর পুরস্কার পাওয়া নিয়ে খুশি নেপচুন বাগানের উপব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন। তিনি বলেন, পুরস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত হওয়ার পর উপলক্ষ্মীকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। চা বোর্ডের প্রতিনিধি দলের কাছে পাতা উত্তোলনের পরীক্ষা দিতে হয়, সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি।

উপলক্ষ্মী ত্রিপুরার এক ছেলে, চার মেয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন ইস্পাহানী গ্রুপের মালিকাধীন এই নেপচুন চা বাগানে কর্মরত। স্বামী বিশু কুমার ত্রিপুরাও একই বাগানের শ্রমিক।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল বন্ধ

রাজশাহী স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির ৩৮ দফা দাবি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা / আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে সরকার

যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার পর জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরের মৃত্যু

নতুন ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে ৪০ হাজার মানুষকে খাওয়ানো হবে বিরিয়ানি

শিশু পুষ্টিতে শাকসবজির গুরুত্ব নিয়ে সায়েন্টিফিক সেমিনার অনুষ্ঠিত

৮ দিন পর গুলিতে নিহত যুবকের মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ

ফ্যাসিস্ট পালালেও ফ্যাসিবাদের কালো ছায়া দেশ থেকে যায়নি : জামায়াত আমির

দীর্ঘদিনের কাশি? কখন ফুসফুস পরীক্ষা করাবেন জানুন

শ্রমিকদের চা খেতে দেওয়া তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা

১০

নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে ‘জাতীয় সমাবেশ’, যা বললেন বক্তারা

১১

ভালোবাসার এক বছর 

১২

নারায়ণগঞ্জে মার্কেটে আগুন, পুড়ে গেছে ৩০ দোকান

১৩

অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

১৪

শেখ হাসিনা যতদিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কিনা জানালেন জয়শঙ্কর

১৫

কিন্ডারগার্টেনের জন্য সরকারি নীতিমালার আশ্বাস আমিনুল হকের

১৬

শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৭

সিএমপি বন্দর থানার নতুন ওসি আব্দুর রহিম, বাকিরা যেখানে

১৮

তর্কে জড়ানো সেই চিকিৎসককে বহিষ্কারের নির্দেশ

১৯

বিশ্বকাপজয়ী বিধ্বংসী ব্যাটারকে দলে ভেড়াল রংপুর

২০
X