চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফরেস্টের বিট কার্যালয়ের পাশেই নির্বিচারে পাহাড়ের মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় কাঠবোঝাই একটি ট্রাককে জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে ট্রাকটিকে জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, শুক্রবার ফরেস্টের বিট কার্যালয়ের পাশেই নির্বিচারে পাহাড়ের মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে- এমন গোপন তথ্য জানতে পারেন সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আশরাফুল আলম। তাৎক্ষণিক উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম। এ সময় কাঠবোঝাই একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। তবে পালিয়ে যায় বনখেকোরা।
অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাস্থলের মাত্র কয়েকশ গজ দূরেই রয়েছে একটি ফরেস্ট অফিস। গাছ কাটার সময় সেই অফিসের বিট কর্মকর্তা সেখানে গেলেও রহস্যজনক কারণে নীরবতা পালন করেছেন। ফলে নির্বিচারে গাছগুলো কাটার সাহস পেয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের সরকারি পাহাড়ের একটি অংশে চাষাবাদ করছিলেন বাড়বকুণ্ডের দাড়ালিয়া পাড়ার সেকান্দার। ওই বাগানে রয়েছে শত শত সরকারি সেগুন গাছ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সেকান্দার অন্তত ৩০ জন শ্রমিক নিয়োগ করে বাগানের বড় বড় অর্ধ শতাধিক সেগুন গাছ কেটে বিভিন্ন চক্রের কাছে বিক্রি করতে শুরু করেন। রাতে কয়েকটি ট্রাকে কাঠ পাচার হয় বাগান থেকে। কিন্তু ঘটনাস্থলের মাত্র কয়েকশ গজ দূরে থাকা বাড়বকুণ্ড ফরেস্টের বিট অফিস থাকলেও রহস্যজনক কারণে বন কর্মকর্তারা নীরবতা পালন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে বাড়বকুণ্ড বন বিট অফিসের এত কাছে কীভাবে গাছগুলো কাটা হচ্ছে তা জানতে চাইলে কুমিরার রেঞ্জ অফিসার মো. মকসুদ বলেন, ‘এই গাছগুলো কাটার জন্য একটি চক্র আমাদের কাছে লিখিত আবেদন করেছিল। তাদের আবেদন যাচাই করতে গিয়ে আমরা দেখি যেখানে গাছ সেই দাগের সঙ্গে আবেদনপত্রের দাগের মিল নেই। যেখানে গাছ আছে সেটি অন্য দাগের জায়গা। তাই আমরা তাদেরকে গাছ কাটার কোনো অনুমোদন দিইনি। কিন্তু শুক্রবার ছুটির দিন থাকার সুযোগ নিয়ে চক্রটি এই গাছগুলো কেটে ফেলছিল। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন।’
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম বলেন, পাহাড় থেকে সেগুন কাঠ কেটে গোপনে পাচার করা হচ্ছে বলে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আমি সেখানে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানের সময় কাঠবোঝাই একটি ট্রাক জব্দ করি। ধারণা করা হচ্ছে, অর্ধ শতাধিক গাছ কেটে নিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ঘটনাস্থলের কাছে বন বিভাগের কর্মকর্তারা থাকার পরও তারা কেন এ বিষয়ে নীরব ছিল তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি। অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড থানার এসআই রবিউলসহ সঙ্গীয় ফোর্স।