কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৫, ১১:৫১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

রমজানে কম মূল্যে নাবিল গ্রুপের পণ্য বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া

নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত
নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম দেশগুলোতে পবিত্র রমজান উপলক্ষে আবশ্যকীয় খাদ্যপণ্যে চলে দাম কমানোর প্রতিযোগিতা। মুসলিম দেশ হলেও বাংলাদেশে এমনটা দেখা যায় না। তবে দেড় যুগের বেশি সময় ধরে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করা নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ রমজানে তাদের সকল পণ্য কম দামে বিক্রি করছে। আর এ উদ্যোগ ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়াও জাগিয়েছে।

নাবিল গ্রুপ জানায়, প্রথম রমজান থেকে চাল, তেলসহ নানা পণ্য ক্রেতারা হ্রাসকৃত মূল্যে কিনতে পারছেন। এই সুযোগ মিলবে রমজান মাসের শেষ দিন পর্যন্ত।

নাবিল গ্রুপের কনজুমার বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার আবিদ হোসেন খান বলেন, হ্রাসকৃত মূল্যের পণ্য চাইলেও ডিলাররা বেশি দামে বেচতে পারবেন না, কারণ প্রতিটি প্যাকেটেই হ্রাসকৃত দাম লিখে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকৃত ক্রেতারাই এই সুবিধা পাবেন।

রাজশাহীর পবা এলাকার অটোচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, এক লিটার নাবিলের ফুডেলা সরিষার তেল কিনেছি, তাও কম দামে। রমজান মাসে সবাই দাম বাড়ায়। এখানে কমে পেলাম। একই এলাকার রাহেলা বেগম জানান, কমদামে তেল কিনতে পেরে তিনি খুশি। এজন্য নাবিল গ্রুপের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

খড়খড়ি এলাকার স্কুল শিক্ষক বায়েজিদ হোসাইন জানান, রমজান মাস ও ঈদ উপলক্ষে চিনিগুড়া চাল বাড়তি দামে কিনতে হয়। এবার নাবিলের চিনিগুড়া চাল কিনেছেন। দামেও কম, মানেও অন্য চালের তুলনায় ভালো।

তিনি বলেন, রমজান মাস উপলক্ষে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। নাবিল গ্রুপ এক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। তারা তাদের পণ্যের দাম তো বাড়ায়ইনি, উল্টো কমিয়েছে। এটা অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মাঝেও একটি অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছে। অন্যরাও এতে উদ্ধুব্ধ হতে পারে।

হ্রাসকৃত মূল্যে পণ্য বিক্রি ক্রেতাদের মধ্যে অভাবনীয় সাড়া জাগিয়েছে বলে জানান, নাবিল গ্রুপের পণ্য বিক্রেতা রফিকুল আলম। তিনি বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যে দাম ছাড় দেওয়ায় অন্যান্য বারের তুলনায় ক্রেতাদের বাড়তি ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তই বেশ ভালো বেচাকেনা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে নাবিল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, রমজান মাস ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসে ত্বাকওয়া অর্জন তথা আত্মশুদ্ধির জন্য বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকে এই মাসকে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের সুযোগ হিসাবে নেয়। নাবিল গ্রুপ সবসময় দেশ ও মানুষের কল্যাণে ব্যবসা পরিচালনা করে। এজন্য দাম কমানোর পাশাপাশি পবিত্র রমজান মাসে দেশের অসহায় গরিব ও দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই উদ্যোগের অংশ হিসাবে পর্যায়ক্রমে ৫০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রচলিত ব্যবসায়িক কৌশল হলো রমজানে বাজার চাহিদাকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন। আমরা এ হীন অপকৌশলের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে, পূর্ব নির্ধারিত নির্দিষ্ট মূল্য থেকেও বাড়তি ছাড়ে পণ্য বিক্রি শুরু করেছি। ফলে গরিব অসহায়দের পাশাপাশি, নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জনজীবনে স্বস্তি এসেছে। নাবিল গ্রুপ দেশের মানুষের পাশে থাকতে পেরে গর্বিত। আমরা দেশ ও মানুষের কল্যাণে সবসময় নিবেদিত থাকতে চাই।

২০০৬ সালে মাত্র ৫ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করা এ ব্যবসায়ী গ্রুপটি এখন দেশের চতুর্থ শীর্ষ খাদ্যপণ্য আমদানিকারক। এ ছাড়া তারা কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণেও নেতৃত্ব দিচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে অবদান রাখছে গ্রুপটি। বিপুল কর্মসংস্থান ও মানসম্মত পণ্য উৎপাদনের কারণে বর্তমানে আলোচনায় এসেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ শিল্পগ্রুপ।

নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. জাহান বকস্ মন্ডল বলেন, পবিত্র রমজান মাসে ধনী-গরিব সবার পরিবারেরই প্রাত্যহিক খরচ বেড়ে যায়। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে গরিব অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে নাবিল গ্রুপ। এ ছাড়া হ্রাসকৃত মূল্যে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে নিম্ন ও মধ্যবিত্তসহ সকলের কম খরচে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ করে দিয়েছে। নাবিল গ্রুপের এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষিপণ্য সরবরাহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে এক যুগের বেশি সময় ধরে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই ব্যবসায়ী গ্রুপ গম, মসুর ডাল, মটর ডাল, সয়াবিনসহ বেশ কয়েকটি পণ্যেও দেশের অন্যতম বড় আমদানিকারক।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ২০২৪ সালের হিসেব অনুযায়ী দেশের সাতটি নিত্য পণ্য আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের তালিকায় শীর্ষ চারে রয়েছে নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। দেশের খাদ্যপণ্যের বাজারে নাবিল গ্রুপের হিস্যা ১০ শতাংশ। মাত্র ১ শতাংশ বেশি নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে টিকে গ্রুপ। এ ছাড়া নাবিলের চেয়ে মাত্র ৫ ও ৭ শতাংশ বেশি নিয়ে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও প্রথম স্থানে রয়েছে সিটি ও মেঘনা গ্রুপ। শীর্ষ ৫ এর সকল প্রতিষ্ঠানেরই ব্যবসা পরিচালনার অভিজ্ঞতা অর্ধশতাব্দী বা তারচেয়ে বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলছে মাত্র দেড় যুগ বয়সী কৃষি-শিল্পগ্রুপ নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। দেশের পণ্য বাজারে নাবিলের অংশীদারত্ব মসুর ডালে ৪৯ শতাংশ, ছোলায় ৫৭ শতাংশ, মটর ডালে ৩৯ শতাংশ, গমে ২৪ শতাংশ, ফিডে ১৬ শতাংশ, সয়াবিনে ১৬ শতাংশ, ভুট্টায় ১১ শতাংশ, কোল্ড স্টোরেজের আলুতে ৬ শতাংশ এবং ধানে ৭ .৬২ শতাংশ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু বন্ধ করতে হবে : মির্জা ফখরুল 

গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ অনুষ্ঠিত

শেখ হাসিনার স্টেট ডিফেন্স আমিনুলকে সরিয়ে দিলেন ট্রাইব্যুনাল

ইসরায়েলের হয়ে কাজ করা ৭০০ ভাড়াটে সৈনিক গ্রেপ্তার

বৈষম্যবিরোধী ছেড়ে ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দিলেন ৩ নেতা

আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশকে সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয় : তারেক রহমান

এক ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না : বিএনপি

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করল ইরান

সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার

রাইস কুকারে রান্নার সময় কোলের শিশুসহ মায়ের মৃত্যু

১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুল ছেঁড়া নিয়ে সংঘর্ষ

১১

গণসংহতি আন্দোলনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা

১২

উপদেষ্টা আসিফকে ক্ষমা চাইতে হবে : ইশরাক হোসেন

১৩

উপবৃত্তির নামে চাওয়া হচ্ছে পিন-ওটিপি, সতর্ক করল শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট

১৪

সৌরভ গাঙ্গুলীর চরিত্র নিয়ে নার্ভাস রাজকুমার

১৫

ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের

১৬

কলম্বোতে দুই উইকেট হারিয়ে লাঞ্চে বাংলাদেশ

১৭

পিলখানা হত্যাকাণ্ড / পালিয়ে থাকা নানক ও আজম ইমেইলে সাক্ষ্য দিয়েছেন : তদন্ত কমিশন

১৮

বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে ২২ লাখ টাকার মালপত্র লুট

১৯

এনসিপি নেতা ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

২০
X