ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পানির চরম সংকটে রোগী ও স্বজনদের জীবন দুর্বিষহ । দীর্ঘদিন সবকটি টিউবয়েল বিকলসহ (৪ জুলাই) রাত থেকে হাসপাতালটির পানি সরবরাহের বৈদ্যুতিক পাম্প নষ্ট থাকায় বিপাকে পড়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা। ১শ শয্যার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৮শ থেকে হাজার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে যান।
রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালের কোথাও বিন্দুমাত্র পানির ব্যবস্থা নেই। আমরা পানির তৃষ্ণায় ছটফট করছি। হাসপাতালের বাহিরে মসজিদের পাশে একটি টিউবওয়েল থেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। একটি সরকারি হাসপাতালে এভাবে টিউবয়েলগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে দেখার কেউ নেই।
পানি না থাকায় হাসপাতালের বাথরুম ও টয়লেট নোংরা হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় রোগী ও তাদের স্বজনেরা বোতল ও কলসিতে করে দূর থেকে পানি সংগ্রহ করে কোনোরকমে জরুরি প্রয়োজন মেটাচ্ছেন।
জরুরি বিভাগের কর্মরত নার্সরা জানান, তারা শহরের চাঁদকাঠি চৌমাথা ও গুরুধাম মসজিদের টিউবওয়েল থেকে পানি এনে পান করছেন।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্সরা বলেন, এখানে টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে অনেক দিন। তাই কোনো খাবার পানির ব্যবস্থা নেই। আমরা বাসা থেকে পানি নিয়ে আসি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে সরবরাহ লাইনেও পানি নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের দুই পাশে দুটি ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডের পাশে একটি টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে হাসপাতালে পানি তোলার বৈদ্যুতিক পাম্প দুটিও নষ্ট। এ ছাড়াও হাসপাতালে ছোট ছোট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানো থাকলেও সেগুলো সবগুলো অচল থাকার কারণে তা কোনো কাজে আসছে না।
টিউবওয়েল নষ্টের বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী সমরজিৎ সিং বলেন, তিনটি টিউবওয়েলই সচল করে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে সমস্যা হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আমাকে কিছু জানায়নি। আমি আপনার মাধ্যমেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঠিক করার জন্য লোক পাঠাচ্ছি।
পানির পাম্প নষ্টের বিষয়ে ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহামুদ হাসান শাওন বলেন, পানির পাম্প ও তার পুড়ে গেছে। আমরা সারাদিন সচল করার জন্য চেষ্টা করেছি। নতুন একটি পাম্প বসিয়েছিলাম তাতেও কাজ হচ্ছে না। অন্য আরেকটি পাম্প নিয়ে এসেছি রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই পানির সমস্যা দূর করতে পারব।
পানি সংকটের বিষয় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শামীম আহমেদ বলেন, সমস্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে। আশা করি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।
মন্তব্য করুন