রীতা গুপ্ত, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১:২৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

শিকড় পচে মরছে বেগুন গাছ, লোকসানে কৃষক

শেকড়পচা রোগে আক্রান্ত বেগুন গাছ নিয়ে ক্ষেতে ফুলবাড়ীর চাষি মিজানুর রহমান। ছবি : কালবেলা
শেকড়পচা রোগে আক্রান্ত বেগুন গাছ নিয়ে ক্ষেতে ফুলবাড়ীর চাষি মিজানুর রহমান। ছবি : কালবেলা

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৬নং দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া, ঘোনাপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা লোকসানে পড়েছেন বেগুন চাষ করে। বেগুন গাছের শিকড় পচে মরে যাচ্ছে গাছ। এতে বেগুন ক্ষেত রক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বেগুন চাষিরা।

সরেজমিনে বারাইপাড়া গ্রামের মিসির উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমানের বেগুন ক্ষেতের গিয়ে দেখা যায়, মিজানুর রহমানের ২০ শতক জমিতে হাইব্রিড ও হাজারী জাতের বেগুন চাষ করা হয়েছে। বৈশাখ মাসে বেগুন চারা লাগানোর পর থেকে এ পর্যন্ত সর্বসাকল্যে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তার ক্ষেতের উৎপাদিত বেগুন বিক্রি হয়েছে মাত্র ২ হাজার টাকার। অথচ এ পর্যন্ত মিজানুর রহমানের ৩০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করার কথা। কিন্তু ক্ষেতের বেগুন গাছে শিকড় পচন রোগের আক্রমণে গাছের শিকড় পচে যাচ্ছে আর গাছের ডালগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। অন্য গাছ যাতে আক্রান্ত না হয়ে সেজন্য আক্রান্ত গাছগুলো ক্ষেত থেকে উপড়ে ফেলে দিতে হচ্ছে। শুধু মিজানুর রহমানের-ই নয়, বারাইপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে বেগুন চাষি ছলেমন আলী, আব্দুল লতিফের ছেলে বেগুন চাষি মমিনুল ইসলাম, আব্দুল আজিজের ছেলে বেগুন চাষি মিজানুর রহমান ও ময়েজ মুন্সির ছেলে বেগুন চাষি বেলাল উদ্দিনসহ প্রায় সব বেগুন চাষির বেগুন ক্ষেত এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

বেগুন চাষি মিজানুর রহমান বলেন, প্রথম থেকে ক্ষেতের বেগুন গাছ বেশ হৃষ্টপুষ্ট ছিল। গাছে ফুল ও ফল আসায় উৎপাদিত বেগুন থেকে আশানুরূপ লাভবান হবেন এমন আশা নিয়ে বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই ক্ষেতের ফুল ও ফল ধরা গাছগুলোর মধ্যে দু-একটি করে মরে যেতে শুরু করে। মরা গাছ উপড়ে দেখতে পান শেকড় পচন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগ থেকে রক্ষা করতে অন্তত ১০ বার ওষুধ স্প্রে করেও গাছ রক্ষা করা যাচ্ছে না। অথচ প্রতিবার ওষুধ স্প্রে করতে খরচ হয়েছে ৪০০ টাকা। প্রতিদিনই শেকড় পচন রোগে আক্রান্ত গাছ উপড়ে ফেলতে হচ্ছে। এতে বেগুন ক্ষেত এখন গাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বেগুনের বাজার দর চড়া। কৃষক পর্যায় থেকে পাইকাররা ৬০ টাকা কেজি দরে বেগুন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষেতের বেগুন গাছে রোগ বালাই না হলে উৎপাদিত বেগুন থেকে আশানুরূপ লাভ পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচও উঠবে না, যা গেছে তার পুরোটাই লোকসানে গেছে।

ঘোনাপাড়া গ্রামের বেগুন চাষি আব্দুর রহিম বলেন, ৮ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছিলেন। গাছ বড় হওয়ার পরপরই গাছের মাথা শুকিয়ে গোড়া পচে দু-একদিনেই মরে যাচ্ছে। এতে পুরো বেগুন ক্ষেতের গাছই মরে গেছে। এজন্য আবাদের সাড়ে ৩ হাজার টাকাই লোকসানে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাহানুর রহমান বলেন, এ সময় বেগুন গাছ ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ বিষয়ে কোনো কৃষক কৃষি অফিসে আসেননি। তবে সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেগুন ক্ষেত দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব মো. আব্দুর রহমান

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় খুবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

তামিল অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা

তরুণদের মাঝে মহানবীর (সা.) সুন্নাহ জাগাতে বাহরাইন সরকারের বিশেষ উদ্যোগ

পুকুরে আছড়ে পড়ল হেলিকপ্টার

পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে : অধ্যাপক মজিবুর রহমান

ট্রাম্প প্রশাসনের ‘উগ্র দক্ষিণপন্থি’ নতুন যুক্তরাষ্ট্র

এক ছাতার নিচে ৩ পরাশক্তি, কোন দিকে যাচ্ছে বিশ্ব?

হামলা-মামলা নির্যাতনেও হাসিনার কাছে মাথানত করিনি : এ্যানি

তিন মাস পর বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি নিয়ে মুখ খুলল আরসিবি

১০

আগারগাঁওয়ে ‘ব্লকেড’, সিইসির সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক বাতিল

১১

সময় টিভির পরিচালক পদ ফিরে পেলেন আহমেদ জোবায়ের

১২

জাকসু নির্বাচন / ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা, মনোনয়ন পেলেন শেখ সাদী-বৈশাখী

১৩

সব কালো চক্রান্ত থেকে রক্ষা করার মালিক আল্লাহ : আরএস ফাহিম

১৪

রোজার আগে নির্বাচন, ভোটের ৬০ দিন আগে তপশিল : আখতার আহমেদ 

১৫

‘কেউ তো জানে’ আসছে এনটিভির পর্দায়

১৬

মসজিদুল হারামে এ সপ্তাহে জুমা পড়াবেন শায়খ সুদাইস

১৭

৬ বছরেও শেষ হয়নি কাজ, আশ্রয়কেন্দ্র এখন মাদকসেবীদের আখড়া

১৮

জার্সিতে নাম পাল্টালেন হলান্ড

১৯

ডিবি কার্যালয়ে লতিফ সিদ্দিকী

২০
X