বর্ষাকাল এলেই খাল-বিল, নদনদী ও পতিত জমি ভরে ওঠে নতুন জলে। আর এই নতুন জলে পাওয়া যায় নানা প্রজাতির ছোট-বড় মাছ। আর এসব মাছ ধরতে জেলেরাসহ স্থানীয়রা অন্যান্য মাছ ধরার ফাঁদের পাশাপাশি মাছ ধরার চাঁই পেতে ছোট মাছ শিকার করে থাকেন।
তবে এ বছর কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় অন্যান্য বছরের মতো নতুন পানির তেমন উপস্থিতি না থাকায় কমেছে মাছ ধরার ফাঁদ চাঁইয়ের চাহিদা। ফলে মুখে হাসি নেই বাজারে চাঁই বিক্রি করতে আসা বিক্রেতাদের। বাজারে চাহিদা না থাকায় মাছ ধরার এসব ফাঁদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সাহেবাবাদ বাজারে বিভিন্ন রকমের মাছ ধরার ফাঁদ চাঁইয়ের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন কয়েকজন বিক্রেতা। তবে অন্যান্য বছরের মতো এ বছর মাছ ধরার ফাঁদ চাঁইয়ের তেমন ক্রেতা না থাকায় হতাশা নিয়ে অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্যান্য বছরের মতো এ বছর এ উপজেলার খাল-বিল ও পতিত জমিতে বর্ষার নতুন পানি তেমনভাবে জমেনি। যার ফলে চাঁই পেতে মাছ শিকারের সুযোগও তেমন নেই। যে কারণে আর সব বর্ষাকালের মতো এবার মাছ ধরার ফাঁদ চাঁইয়ের বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম। এতে চাঁই বিক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে। তবে বিক্রেতারা আশা করছেন, শ্রাবণ মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে কিছুদিন পর হয়তো চাঁইয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
সাহেবাবাদ বাজারে মাছ ধরার ফাঁদ চাঁই কিনতে আসা উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের নাগাইশ এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ মাস চলছে, কিন্তু এ বছর অন্যান্য বছরের মতো পানি জমেনি। শ্রাবণ মাসেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে না। যার ফলে এ বছর হাটে চাঁইয়ের চাহিদা তেমন একটা নেই। আমি অন্যান্য বছর বর্ষা মৌসুমে ৭ থেকে ৮টি চাই কিনি। এ বছর শুধু একটি চাঁই কিনেছি।
সাহেবাবাদ বাজারে চাঁই বিক্রি করতে আসা বাহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এ বছর আগাম বন্যায় দেশের কয়েকটি জেলা প্লাবিত হয়েছে। ভেবেছিলাম এ বছর এ উপজেলার খাল-বিল টইটম্বুর হয়ে উঠবে। তাই এবার হাটে বিক্রির জন্য অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি চাঁই তৈরি করেছি। কিন্তু এ বছর এ উপজেলায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বর্ষার পানি জমেনি। তাই বাজারে এ বছর চাঁইয়ের চাহিদা তেমন নেই। গত তিন ঘণ্টায় একটিও চাঁই বিক্রি করতে পারিনি।
একই বাজারের আবুল হোসেন নামের অপর এক বিক্রেতা কালবেলাকে বলেন, দিন দিনই চাঁই পেতে মাছ ধরার প্রবণতা কমে আসছে। তবে এ বছর বাজারে ক্রেতা নেই বললেই চলে। সকাল থেকে এই বিকেল পর্যন্ত ২টি চাঁই বিক্রি করেছি। আশা করছি এই শ্রাবণ মাসে বৃষ্টিপাত বেশি হলে হয়ত বিক্রি বাড়তে পারে।
মফিজ উদ্দিন নামের আরেক বিক্রেতা কালবেলাকে বলেন, এ বছরের মতো মন্দাভাব আর কোনো বছর যায়নি। নতুন পানি আসলে ছোট মাছ ধরার হিড়িক পড়ে এবং আন্তার (চাঁই) বেচাকেনা জমে ওঠে। তবে এ বছর এমনটা হয়নি। এবার এই উপজেলার খাল-বিল ও পতিত জমিতে পর্যাপ্ত পানি জমেনি। এবার আমাদেরকে লোকসান গুনতে হবে।
মন্তব্য করুন