জনবল সংকটে ধুঁকছে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। বিশেষ করে চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ বাসিন্দা।
প্রতিদিন বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রচুর সংখ্যক রোগী ভিড় করছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত গুটিকয়েক চিকিৎসক।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সরকারিভাবে ২২ জন ডাক্তারের নিয়োগ থাকলেও বদলিজনিত কারণে এখন কর্মরত রয়েছেন ১৩ জন। এদের মধ্যে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছে একজন। সংযুক্তিতে আছে ২ জন। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি ৩০ শয্যা ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আউটডোর ও জরুরি বিভাগে প্রচুর সংখ্যক রোগী দাঁড়িয়ে আছে লাইনে। অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করে আবার ডাক্তারের চেম্বারের সামনে লাইন ধরে ডাক্তার দেখাতে হয়। এতে অনেক অসুস্থ রোগী আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা কয়েকজন রোগী বলেন, এ হাসপাতালে সব সময় রোগীর ভিড় থাকে। চিকিৎসক দেখাতে হলে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে আমরা ভোগান্তিতে পড়ি।
হাসপাতালে একটি ইসিজি, একটি এক্সরে ও একটি আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন সচল রয়েছে। তবে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা ভালো মানের জেনারেটর মেশিন না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে হাসপাতালে থাকা রোগী ও রোগীর স্বজনদের। হাসপাতালে সরকারিভাবে রোগীদের জন্য একটা অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। অধিকসংখ্যক রোগীকে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করলে ভাড়া অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যেতে হয়।
হাসাপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত সহকারী সার্জন ডা. আছমা আক্তার বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার কমে যাওয়াতে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। ইনডোর ও আউটডোরে প্রতিদিন অনেক রোগী আসে। বর্তমানে হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি রোগী আসে শিশু। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হাসপাতালে একজনও শিশু ডাক্তার নেই।
মনোহরগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আফজালুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। সরকার আমাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। অধিক সংখ্যক রোগীর জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দিতে যে পরিমাণ ডাক্তার, পরিছন্নতা কর্মী, আয়া, ওয়ার্ডবয় প্রয়োজন সে পরিমাণ আমাদের নেই। বর্তমানে আমাদের মেডিকেল অফিসার রয়েছে পাঁচজন। কনসালটেন্ট রয়েছে তিনজন। এত কম সংখ্যক ডাক্তার দ্বারা অধিকসংখ্যক রোগীর সেবা দেওয়া আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্তব্য করুন