

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিফাত খান নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। পরে মৃত্যুর খবরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। সিফাত উপজেলার মতলব পৌরসভার চরমুকন্দি গ্রামের শরিফ খানের ছেলে। তিনি মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজছাত্র সিফাত খানের (২১) মৃত্যুর খবরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্রায় ৩ ঘণ্টা হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রাখেন সিফাতের সহপাঠী, স্বজন ও এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা।
এদিকে খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) জাবির হুসনাইন সানীব ও মতলব দক্ষিণ থানার ওসি সালেহ আহাম্মদ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় প্রচণ্ড জ্বর অবস্থায় সিফাতকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার মা চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোশারফ হোসেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকায় বারান্দায় চিকিৎসা চলে তার। মাগরিবের নামাজের কিছুক্ষণ আগে স্যালাইন শেষ হলে সিফাত হেঁটে বাথরুমে যান।
বাথরুম থেকে বের হয়ে আসার পর মাথা ঘুরে পড়ে যান। ওই সময় তার স্বজনদের চিৎকারে কর্তব্যরত নার্স ছুটে যান এবং ডাক্তারকে তাৎক্ষণিক খবর দেন। খবর পেয়ে ডাক্তার রতন চন্দ্র দাস ভর্তির ওয়ার্ডে ছুটে গিয়ে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সিফাতকে জরুরি বিভাগে নিয়ে ইসিজি করান এবং মৃত ঘোষণা করেন।
সিফাতের সহপাঠী ও স্বজনরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালে আসলে ডাক্তারদের ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সেবা বাদ দিয়ে সারাক্ষণ মোবাইল চালান চিকিৎসকরা। সিফাতের মৃত্যু ডাক্তারের অবহেলা ও ভুলের কারণে হয়েছে।
পরে সিফাতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর উদ্যোগ নিলে তার সহপাঠীরা মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের দাবি তোলেন। পরে তার বাবার লিখিত সম্মতির ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম রায়হান বলেন, আমি স্টেশনে নেই। আমি শুনেছি, রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। তবে ফোনে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ভুল চিকিৎসা বা দায়িত্বে অবহেলা ছিল না।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, মৃত্যু নিয়ে মৃতের বাবার কোনো অভিযোগ নেই। তার বাবা শরীফ খানসহ এলাকার লোকজন আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার আবেদন করেছেন।
মন্তব্য করুন