গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গো-খাদ‍্যে ভরপুর রাখালগাছি চর

গোয়ালন্দ উপজেলার রাখালগাছি মাঠে গরু, ছাগল ও ঘোড়া ঘাস খাচ্ছে। ছবি : কালবেলা
গোয়ালন্দ উপজেলার রাখালগাছি মাঠে গরু, ছাগল ও ঘোড়া ঘাস খাচ্ছে। ছবি : কালবেলা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল রাখালগাছি। দিগন্তজুড়ে ফসলের মাঠের যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শুধু সবুজের সমারোহ। রাখালগাছি চরাঞ্চলটি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি মৌজার মধ্যে অন‍্যতম একটি মৌজা।

চারদিকে পানিতে বেষ্টিত চরাঞ্চলটি এখন কিছুটা হলেও বসবাসের যোগ‍্য হয়ে উঠেছে। গড়ে উঠেছে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও হাটবাজার। এলাকাটি দেবগ্রাম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত।

এক সময় রাখালগাছি চরে এক হাজার পরিবারের বসবাস ছিল। এখন এখানে প্রায় ৪-৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। মৌজাটি বছরের প্রায় ৬/৭ মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এ এলাকার মানুষের প্রধান কাজ কৃষি ও নদীতে মাছ শিকার করা। এতেই চলে তাদের জীবন-জীবিকা। শহরে যাতায়াতের জন্য রয়েছে ঘোড়ার গাড়ি ও যন্ত্রচালিত ট্রলার এবং কাঠের তৈরি ছোট নৌকা।

সম্প্রতি জায়কা প্রকল্পের আওতায় আড়াই কিলোমিটার ইটের রাস্তা হওয়ায় নিকটবর্তী পাবনার সঙ্গে যাতায়াতে ঘটেছে নববিপ্লব। এখন খুব সহজেই কৃষিপণ্য আনা নেয়ায় ব‍্যবহার হচ্ছে ভ‍্যান, অটোরিকশা, নছিমন, করিমন ও ছোট-বড় ট্রাক।

এ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। প্রায় প্রত‍্যেকটি পরিবারেরই রয়েছে গরু, ছাগল, ঘোড়া ও হাঁস-মুরগি। গো-খাদ‍্যের বিপুল সমাহার রয়েছে এ চরাঞ্চলে। সুতরাং পশুগুলোকে ঘাস ছাড়া বাড়তি কোনো খাবার দিতে হয় না তাদের।

শুকনো মৌসুমে এ এলাকায় গেলে চোখে পড়ে এক মনোরম দৃশ্য। সবুজ ফসলের মাঠ জুড়ে বিচরণ করছে গরু, ছাগল ও ঘোড়া। বিস্ময়ের একটি ব‍্যাপার হলো এতগুলো পশুর গলায় নেই কোনো রশি। পশুগুলো ইচ্ছে মত ঘুরে ঘুরে এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে বিচরণ করে। ইচ্ছে মত ঘাস খাচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বিশাল ফসলের মাঠে বিচরণ করছে শত শত গরু। একটা পশুরও গলায় দড়ি নেই। গরুগুলো ইচ্ছে মত ঘুরে ঘুরে ঘাস খাচ্ছে। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগেই রাখাল-রাখালী নিজ নিজ গরুগুলো নিয়ে বাড়িতে ফিরছে।

কথা হয় গ্রামের হাসু শেখ, জামাল মোল্লা, ছাত্তার মোল্লা, ছালাম খাঁসহ অনেকের সঙ্গে। প্রশ্ন করতেই সহজ-সরল ভাষায় বলেন, সকালের খেয়ে দুপুরের খাবারসহ গরুগুলো নিয়ে মাঠে এসেছি। গরুগুলো মাঠে ছেড়ে দিয়ে নিজে চাষাবাদের কাজ করেছি। গরুর গলায় দড়ি দেয়া লাগে না। ওরা ইচ্ছা মতো খাস খায়। দিনভর খাওয়া শেষে সন্ধ্যার আগে বাড়িতে নিয়ে আসি। এখন নদীতে পানি কম থাকায় গরুগুলো ইচ্ছে মতো মাঠে ঘাস খেতে পারে।

এখানে অনাবাদি অনেক জমি পড়ে থাকায় পশুদের খাদ‍্যের কোনো সমস্যা হয় না। বরং দূর-দূরান্ত থেকে ঘাস নেয়ার জন‍্য ট্রলার ভর্তি নারী-পুরুষ প্রতিদিন এ চরে আসে। সন্ধ‍্যার আগে গোয়ালন্দের ট্রলার ঘাটগুলোতে দাঁড়ালে গোখাদ‍্য নিয়ে ফেরা ট্রলার চোখে পড়বে।

গোখাদ‍্য সংগ্রহের জন‍্য রাজবাড়ী সদরের উড়াকান্দা ঘাট, অন্তর মোড় ঘাট, দেবগ্রামের কাওয়ালজানি ঘাট, দৌলতদিয়া মুন্সী বাজার ঘাট, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাট এলাকা থেকে সকাল ৮টায় ট্রলার ছেড়ে যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, দেবগ্রামের ইউনিয়নের শেষ সীমানা কুশাহাটার চর। বর্তমানে সেখানে মানুষ খুবই ভালো আছেন। চলাচলের জন্য সুন্দর সড়ক তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে স্বচ্ছলতা। সেখানকার মানুষের মূল আয়ের উৎস হল কৃষিকাজ ও মৎস্য আহরণ। আমরা সরকারিভাবে দ্রুত সেখানে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মামলা নিয়ে বিচলিত নন পলক, আইনজীবীকে ট্রায়ালের প্রস্তুতির নির্দেশ

ঘুষকাণ্ডে এবার জামায়াতের সেই পিপির নিয়োগ বাতিল

ভরা মৌসুমেও ইলিশের আকাল

শোকজের জবাব দেবেন ফজলুর রহমান

হত্যাচেষ্টার নতুন মামলায় পলক, রাষ্ট্রদ্রোহে জাহাঙ্গীর গ্রেপ্তার

অস্ত্র উদ্ধারে পুরস্কার ঘোষণা সরকারের

প্রিয় মানুষের অভিমান ভেঙে ফেলুন সহজ কিছু উপায়ে

ইসলামী সংগীত গাইলেন ইউটিউবার সাইদুল হাসান

টঙ্গীতে ব্রিজ নির্মাণ ও সড়ক সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ 

ভারতে আসছে আর্জেন্টিনা, প্রতিপক্ষ হিসেবে যাদের নাম আলোচনায়

১০

তৌহিদ আফ্রিদির ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে সিআইডি

১১

দেশ এখন স্থিতিশীল, জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত : প্রধান উপদেষ্টা

১২

চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীর গোডাউনে মিলল টিসিবির বিপুল তেল

১৩

‘বাদল ভাই, আপনার মৃত্যুতে শোকাহত অনেক’

১৪

টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরার তালিকায় সাকিবের অবস্থান কত

১৫

ডাকসুর ভিপি প্রার্থী আবিদুলকে নিয়ে অপপ্রচার

১৬

বাচসাস পরিবারের সদস্য বাদল আহমেদ আর নেই

১৭

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে চাকরি, সপ্তাহে দুদিন ছুটি

১৮

উপদেষ্টা হোক আর রাজনীতিবিদ, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না : সারজিস

১৯

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ৭ দফা প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার

২০
X