ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ব্রাহ্মণপাড়ায় বন্যায় ভেস্তে গেছে আউশ চাষিদের স্বপ্ন

ব্রাহ্মণপাড়ায় বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হওয়া ধানক্ষেত। ছবি : কালবেলা
ব্রাহ্মণপাড়ায় বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হওয়া ধানক্ষেত। ছবি : কালবেলা

ভারি বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা ডুবে গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার আউশ চাষিদের স্বপ্নের ফসল। যার ফলে আধাপাকা ও পাকা আউশ ধান ঘরে তুলতে পারেননি অধিকাংশ কৃষক। উপজেলায় বিভিন্ন ফসল নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা কৃষকেরা।

সরেজমিনে উপজেলার মালাপাড়া, সাহেবাবাদ, শশীদল, চান্দলা, দুলালপুর ও সদর ইউনিয়নের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি ফসলি মাঠে ছিল পাকা ও আধাপাকা আউশ ধান। দ্রুত গতিতে বন্যার পানি ফসলি মাঠে প্রবেশ করায় কৃষকরা তড়িঘড়ি করে পাকা ধানও কাটতে পারেনি। কৃষকদের চোখের সামনেই তাদের শ্রমে অর্জিত ফসল তলিয়ে গেছে। অর্থ ব্যয়, শ্রম ও ঘামে ফলানো ফসল ঘরে তোলার আগে এভাবে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে তারা ভাবতে পারেনি।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভারি বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ এবং সালদা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে উপজেলার ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আকস্মিক এই বন্যায় তিন হাজার ৭৭২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৬৫০ হেক্টর জমির আধাপাকা ও পাকা রোপা আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

উপজেলার দুলালপুর এলাকার কৃষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বন্যায় আমার পাঁচ একর জমির পাকা ও আধাপাকা ধান তলিয়ে গেছে। অসময়ের এ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে এসব জমির ধানে এখন তার গোলা ভরা থাকত। এ ছাড়া বন্যায় সম্প্রতি রোপণ করা আমন ধানের চারাও নষ্ট হয়ে গেছে।

মালাপাড়া ইউনিয়নের আসাদনগর এলাকার কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, বন্যায় আমার ৩৯ শতক জমির আধাপাকা ধান তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি সপ্তাহখানেক পর এলে আমি ধান গোলায় তুলতে পারতাম। আউশ ধান ছাড়াও সকল কৃষকের আমন ধানের ছাড়া নষ্ট হয়ে গেছে।

শিদলাই এলাকার কৃষক মো. মামুন মিয়া বলেন, বন্যার আগে ৫৩ শতক জমির মধ্যে কিছু পাকা ধান কেটে এনেছিলাম। হঠাৎ করেই বন্যার পানি আসায় বাকি জমিগুলো তলিয়ে যায়। এতে আমার পাকা ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

উপজেলার মহালক্ষীপাড়া এলাকার কৃষক শাহাদাত হোসেন বলেন, জমিতে ধান পাকা শুরু করেছিল। সে সময় ভেবেছিলাম কয়েকদিনের মধ্যে ধান কেটে বাড়ি তুলব। কিন্তু বন্যার পানি দ্রুত চলে আসায় পুরো মাঠ তলিয়ে যায়। পাকা ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ ফসলি মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আধাপাকা ও পাকা আউশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আবাদ করা আমন ও আমনের বীজতলা এবং শাকসবজি। উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৯০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ও আমন আবাদে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের জন্য উপজেলার দুই হাজার কৃষকের মধ্যে নগদ অর্থ, বীজ ও স্যার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে আমাদের সব কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সড়ক পরিহার করে সভা-সমাবেশ করার অনুরোধ ডিএমপি কমিশনারের

আমরা সবাই বাংলাদেশি, এর বাইরে কোনো পরিচয় নেই : জিলানী

জামদানি পল্লী পরিদর্শনে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

উৎসবমুখর পরিবেশে নর্দান ইউনিভার্সিটিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ

বাংলাদেশ থেকে লক্ষাধিক টাকা বেতনে নার্স নেবে কুয়েত

সংবিধানের ওপরে জুলাই সনদ প্রাধান্য পেতে পারে না : গণফোরাম

ঢাবি উপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃতভাবে’ উপস্থাপনের প্রতিবাদ কর্তৃপক্ষের

হাজার হাজার মার্কিনি নিচ্ছেন মেক্সিকোর নাগরিকত্ব

যাদের জনসমর্থন নেই, তারাই পিআর চায় : এসএম জাহাঙ্গীর

আরও একটি ট্রফি হাতছাড়া রোনালদোর

১০

জাতীয় সনদে জনআকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে : আ স ম রব

১১

ভালো কাজের প্রতিযোগিতার আহ্বান সাদিক কায়েমের

১২

মানুষ কেন হাই তোলে? গবেষণায় জানা গেল নতুন তথ্য

১৩

বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন নে‌ত্রী : ফরহাদ মজহার

১৪

মওলানা ভাসানী সেতুর বিদ্যুতের তার চুরি, থানায় মামলা

১৫

১২ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

১৬

কাঠগড়ায় টুলে বসলেন মাইটিভির নাসির, ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে ক্ষোভ আনিসুল-মেননের

১৭

মির্জা ফখরুলের কাছে যেসব প্রশ্ন রাখলেন ফুয়াদ

১৮

মেঘনার দুই ইলিশ বিক্রি সাড়ে ১১ হাজার

১৯

ভারত বুঝতে পেরেছে, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বটা কেন দরকার

২০
X