সিরাজুল মোস্তাকিম দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়)
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৯ এএম
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আফ্রিকান’ কাসাভা চাষে তাক লাগালেন পঞ্চগড়ের মোস্তফা কামাল

পঞ্চগড়ে কাসাভা উৎপাদনে সফল কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা কামাল। ছবি : কালবেলা
পঞ্চগড়ে কাসাভা উৎপাদনে সফল কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা কামাল। ছবি : কালবেলা

পঞ্চগড়ে ‘আফ্রিকান’ কাসাভা উৎপাদনে সফল হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা কামাল। দেশের বেশকিছু জেলাতে এর আবাদ আগে থেকে হলেও মোস্তফা কামালই প্রথম পঞ্চগড়ে কাসাভার চাষ শুরু করেন। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বীও হওয়ার পাশাপাশি কৃষি পাড়ায় তিনি এখন পরিচিত মুখ। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পঞ্চগড়ে কাসাভা চাষের সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে আছে নিবিড়ভাবে।

মোস্তফা কামালের বাড়ি দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের কাদেরের মোড় এলাকায়।

জানা গেছে, কাসাভা একটি উৎকৃষ্ট মানের খাদ্যবস্তু। পৃথিবীর অনেক দেশের প্রধান খাদ্য এটি। আমাদের দেশে শিমুল আলু নামে পরিচিত এ ফসল মার্চ-এপ্রিলে রোপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। অনুর্বর জমিতে খরাসহিষ্ণু ফসলটির প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ১০ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব।

এ বিষয়ে কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা কামালের সঙ্গে কথা হলে কালবেলাকে তিনি জানান, ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে প্রচলিত ফসলের বাইরে গিয়ে কাসাভা চাষ শুরু করি। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। গত চার বছরে তার কাসাভা ও মিষ্টি আলু চাষের পরিধি বেড়েছে। নতুন ফসলেরও চাষ শুরু করেছেন।

তিনি জানান, শুধু ফসল উৎপাদন নয় বরং মনোযোগ দিয়েছেন উন্নত জাতের চারা উৎপাদনে। ২০২৩ সালে দেশের ৩০টি জেলায় কাসাভা ও মিষ্টি আলুর চারা সরবরাহ করেছি। ওই বছর ৭ লাখ কাসাভা ও ৬০ লাখ মিষ্টি আলুর কাটিং বিক্রি করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের গাজকাটী এলাকায় প্রথমে কাসাভা চাষ শুরু করেন মোস্তফা কামাল। প্রথমদিকে অন্যের জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ কাজ শুরু করি। ওকিনেওয়া ও মুরাসাকি জাতের জাপানি মিষ্টি আলুর কাটিংও সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেন মোস্তফা।

এ ছাড়া কাসাভা ও মিষ্টি আলু প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য কিনেছেন স্লাইসার, ক্রাশিং ও ড্রাইং মেশিন। এসব মেশিনে মিষ্টি আলু ও কাসাবার আটা তৈরি করে বাজারজাত করছেন তিনি।

বিগত বছরগুলো কাসাভা চাষে আর্থিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিকল্পনাতেও পরিবর্তন আনেন মোস্তফা। চলতি বছরে ৯০ বিঘা জমিতে কাসাভা ছাড়াও ১০ বিঘায় মাদ্রাজী জাতের ওলকচুর চাষ করেছেন। আশা করছেন ৪০০ মন ওলকচু পাবেন। প্রতি কেজি ওলকচু ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

এ ছাড়া জাপানি মুরাসাকি, জাপানি ওয়াকীনওয়া জাতের মিষ্টি আলুর চাষ করেছেন ৪০ বিঘা জমিতে। চলতি বছর সারাদেশে ২৫ লাখ মিষ্টি আলুর কাটিং সরবরাহ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। প্রতিটি কাটিং ২ টাকা করে বিক্রি হয়। ভবিষ্যতে কাসাভা থেকে পলিব্যাগের বিকল্প নবায়নযোগ্য ব্যাগ ও অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করবেন বলে পরিকল্পনা আছে মোস্তফার।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ বলেন, কৃষক মোস্তফা কামাল পাঁচ বছর ধরে কাসাভা উৎপাদন করে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা পূরণ এবং এর উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এ কৃষি উদ্যোক্তাকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নীরবে শরীরে যে ৭ ক্ষতি করছে ইউরিক অ্যাসিড

ডুবুরিদের ৩ ঘণ্টার চেষ্টাতেও সন্ধান মেলেনি শিশু নাজিমের

ভাত ছেড়ে দিলেই কি ওজন কমবে? যা বলছেন পুষ্টিবিদ

কানাডা মাতাতে যাচ্ছেন জায়েদ খান

‘বিয়ে করলেও সুখী হতাম না’ লেখা চিরকুটে আরও যা ছিল

সড়কে মিলল ৬ পুরুষের কাটা মাথা, দেহ গায়েব

ড্যাবের নবনির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ইরান থেকে বিতাড়িত আফগানদের দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ল না, নিহত ৭১

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

১০

২০ আগস্ট : আজকের রাশিফলে কী আছে জেনে নিন

১১

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

১২

ওসির স্বাক্ষর জাল করে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, পুলিশ সদস্যের নামে মামলা

১৩

বায়ুদূষণের শীর্ষে জাকার্তা, ঢাকার খবর কী?

১৪

টিভিতে আজকের খেলা

১৫

চক্ষু বিশেষজ্ঞ বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে রেড ক্রিসেন্ট

১৬

দিনাজপুরে প্রজন্ম লীগ নেতা তৈবুর গ্রেপ্তার

১৭

ইতালি যাওয়ার এক দিন পরই বাংলাদেশির মৃত্যু

১৮

আখেরি চাহার সোম্বা আজ, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি

১৯

সেলস ম্যানেজার পদে স্কয়ার গ্রুপে চাকরির সুযোগ

২০
X