কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

আজ জগন্নাথপুর মুক্ত দিবস 

জগন্নাথপুর উপজেলা শহীদ মিনার। ছবি : কালবেলা
জগন্নাথপুর উপজেলা শহীদ মিনার। ছবি : কালবেলা

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে দেশকে মুক্ত করে বাংলার দামাল ছেলেরা। এদিনে জগন্নাথপুরের দামাল ছেলেরা ছাত্র, যুবক, শিক্ষক, কৃষক, আইনজীবী শত্রুমুক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭১ সালে ৯ ডিসেম্বর এই দিনে জগন্নাথপুর থানা শত্রুমুক্ত হয়েছিল।

স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের বর্বরতম দুটি ঘটনা ঘটে জগন্নাথপুরের শ্রীরামিসি ও রানীগঞ্জে। হানাদারদের নৃশংসতা ও রাজাকারদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন এ অঞ্চলের জনগণ।

একাত্তরের ৩১ আগস্ট শ্রীরামসী ও ১ সেপ্টেম্বর রাণীগঞ্জ বাজারে পাক হানাদাররা চালায় বর্বর এক হত্যাযজ্ঞ। শত শত মানুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করেছে। সেই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড আজও এ অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে উঠে। শ্রীরামসি ও রানীগঞ্জ গণহত্যার পর ৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর ভোরে এসে জগন্নাথপুর পৌঁছায় রাজাকার ও পাক হানাদার বাহিনী।

সেখানে অবস্থানকালে জগন্নাথপুর পাক-হানাদার বাহিনীর মূল ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত জগন্নাথপুর থানাতে আক্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ সময় মুক্তিবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরাও যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়। জগন্নাথপুর বাজারের মির্জা ব্যারিস্টার আব্দুল মতিন মিয়ার বাড়ির দক্ষিণ নিকটে যুদ্ধের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করলে পাক-হানাদার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিবাহিনীকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। ওই যুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর পরে মুক্তিবাহিনী পিছু হটে।

পরে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৯ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর থানাকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন। সাহসী যোদ্ধাদের কাছে রাজাকার, পাকসেনারা সেদিন আত্মসমর্পণ করে। জগন্নাথপুর থানায় প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার মরহুম মির্জা আব্দুল মতিন। মুক্তিযুদ্ধে এ থানায় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে মুক্ত হয় জগন্নাথপুর থানা। হাওরের নৌপথে ও সড়কপথে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি অভিযানে জগন্নাথপুর শত্রুমুক্ত হওয়ায় স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় দিন অতিবাহিত করা জনতা রাস্তায় নেমে আসে। মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণের খবর পেয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সড়ক ও হাওরপথে পালিয়ে যায়। জগন্নাথপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পালানোর পথ রেখে বালাট সাব-সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা সুনামগঞ্জেকে শত্রুমুক্ত করতে উদ্যোগ নেন।

চারটি কোম্পানির মধ্য থেকে আক্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা প্রস্তুত ছিলেন যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত ও যৌথ আক্রমণের খবরে ভীতসন্ত্রস্ত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জগন্নাথপুর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। ৯ ডিসেম্বর ভোরে রাস্তায় নেমে এসে দামাল মুক্তিসেনাদের অভিনন্দন জানায় জনতা। দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ থাকার পর হাজার হাজার নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে এসে মুক্তির উল্লাসে মেতে ওঠেন। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচন উৎসবমুখর করতে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা 

গ্রামীণ ব্যাংকের আরও এক শাখায় অগ্নিকাণ্ডের চেষ্টা

নিলামে অংশ নিলেও ক্রিকেটার কেনার ইচ্ছে নেই এই ফ্র্যাঞ্চাইজির

তিন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল

শীতে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়ে, এই ৪ নিয়ম মানলে বিপদ এড়ানো সম্ভব

ভূমিকম্পে হতাহতদের দেখতে হাসপাতালে বিএনপির স্বাস্থ্য সম্পাদক 

ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় জামায়াত আমিরের শোক

বালুর ট্রাকে লুকানো ছিল ৫ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য, অতঃপর...

সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত আলাপ খালেদা জিয়ার 

অতীত ভাবার বিষয় নয়, উন্নয়নের রাজনীতি করতে চাই : বাবর

১০

সাদমান-জয়ের ফিফটিতে চালকের আসনে বাংলাদেশ

১১

বড় ভূমিকম্পের আগাম বার্তা

১২

পানি পানে এই ৪ ভুল করছেন? হতে পারে ভয়াবহ বিপদ

১৩

একাত্তরে স্বপ্নে দেখা সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাই : শামীম সাঈদী

১৪

দুবাই এয়ারশোতে ভারতের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

১৫

ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক

১৬

টানা ৩০ দিন প্রতি রাতে জিরা ভেজানো পানি পান করলে কী হয়?

১৭

যে মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছে তার তুলনায় ‘ইনজুরড’ বেশি : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

১৮

মোটরসাইকেল না দেয়ায় বাড়িতে পেট্রোল ও ককটেল বিস্ফোরণ যুবকের

১৯

পাকিস্তানে বয়লার বিস্ফোরণে ১৫ শ্রমিক নিহত

২০
X