কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এসব ক্যাম্পে স্থাপিত ৭০০ সিসি ক্যামেরার একটিও এখন আর সচল নেই। যার ফলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটছে শিবিরগুলোতে।
২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় আশ্রয় নেয়। আট বছরে সেই সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ লাখে। উখিয়ার পাহাড়ি জনপদের ৮ হাজার একরজুড়ে গড়ে ওঠা ৩৩টি ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণে রাখতে সে সময় স্থাপন করা হয়েছিল কাঁটাতারের বেড়া।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে কিছু ক্যাম্পে কেটে ফেলা হয়েছে কাঁটাতার। এর মধ্যে বালুখালী পানবাজার ক্যাম্পে অন্তত ছয়টি পয়েন্টে কেটে তৈরি করা হয়েছে গোপন পথ। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব কাজ করছে রোহিঙ্গারাই।
এই গোপন পথ ব্যবহার করে রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বাইরে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পড়তে হচ্ছে নতুন চ্যালেঞ্জে। শুধু কাঁটাতার নয়, এপিবিএনের তথ্য অনুযায়ী, ক্যাম্পে স্থাপিত ৭০০ সিসি ক্যামেরার একটিও এখন আর সচল নেই। এসব ধ্বংসাত্মক তৎপরতার মূল কারণ মাদক ও অস্ত্রের কারবার বলে স্বীকার করেছেন রোহিঙ্গা নেতারাও।
বিজিবি জানায়, দুষ্কৃতকারীরা কাঁটাতার কেটে ফেলার পর সেগুলো আর মেরামত করা হয়নি। ফলে ওই পথ ব্যবহার করে কিছু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনকি স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারীও তাদের সঙ্গে জড়িয়ে অপরাধে অংশ নিচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, দিনদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো অরক্ষিত হয়ে পড়ছে। তাই এখন জরুরি হয়ে পড়েছে শক্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা। না হলে ক্যাম্পের পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতে, স্থানীয়দের প্রশ্রয়েই রোহিঙ্গারা এই সুযোগ পাচ্ছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক কালবেলাকে বলেন, ক্যাম্প থেকে অনেক রোহিঙ্গা চুরি করে বের হয়। আমরা তাদের গ্রেপ্তার করে আবার ক্যাম্পে ফেরত পাঠাই। তারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে অনেক সময় নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
মন্তব্য করুন