সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নারায়ণগঞ্জের যুবলীগ নেতা মতি ছেলেসহ গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের যুবলীগ নেতা মতি ছেলেসহ গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি ও তার ছেলে বাবুইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তর করা হয়। ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হক বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জের সুমিলপাড়ার আইলপাড়া এলাকার মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান ও তার ছেলে বাবুই। গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা, ভাটারা ও যাত্রাবাড়ী থানায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। তার ছেলে বাবুইকেও কয়েকটি হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বেশ কিছুদিন জেলহাজতে বাস করেছিলেন মতি। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ধারায় মতি ও তার স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছিলেন দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম। দুদক সূত্র জানায় মামলাটি চলমান রয়েছে।

জানা গেছে, আশির দশকে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমুলপাড়া এলাকায় মুনলাইট সিনেমা হলের টিকিট বিক্রি করতেন মতি। পরে তৎকালীন জাতীয় পার্টির নেতা সফর আলী ভূঁইয়ার হাত ধরে নাম লেখান রাজনীতিতে। নব্বই দশকে এসেও এলাকায় বিএনপির মিছিলে বোমা হামলা করে আলোচনায় আসেন মতি। ওই বোমা হামলায় মনা নামে এক পথচারী নিহত হয়েছিলেন। তার দুই বছর পর নিজ বাড়িসংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদের উপর শাহ আলম বাবু নামে এক যুবককে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার পর থেকেই মতি এলাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিতি পায়। এরপর জাতীয় পার্টি ছেড়ে যোগ দেন যুবলীগে। যুবলীগে যোগ দিয়েই এলাকায় শুরু করেন বেপরোয়া চাঁদাবাজি। গড়ে তোলেন অপরাধ জগতের সাম্রাজ্য। ২০০১ সালে বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এলে তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বিদেশে। পরে অওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ২০০৯ সালে মতি দেশে এসে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেলে যেতে হয়। প্রায় ১ বছর জেলহাজতে বাস করে জামিনে বের হন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক পদ পাওয়ার পরই বদলে যায় তার ভাগ্য। ২০১৬ সালে নাসিকের নির্বাচনে হন ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। হয়েছিলেন ২নং প্যানেল মেয়র। ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি সিটি নির্বাচনেও তিনি কাউন্সিলর বিজয়ী হন। একদিকে জনপ্রতিনিধি, অপরদিকে থানা যুবলীগের আহ্বায়ক হওয়ায় ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন মতি।

ভাটারা থানার এসআই (তদন্ত) সজুন হক জানান, গ্রেপ্তার মতিউর রহমানকে ভাটারা থানায় করা একটি হত্যা মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা হত্যা ও হত্যাচেষ্টাসহ মোট ৪৫টি মামলার প্রতিটিতেই মতিউর রহমান মতি এজাহারনামীয় আসামি।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনুর আলম কালবেলাকে বলেন, মতিউর রহমানকে ভাটারা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আমরা ভাটারা থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় করা অনেক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাংবাদিককে মারধরের মামলায় ছাত্রলীগ নেতা বিদ্যুৎ গ্রেপ্তার

জাওয়াদের সেঞ্চুরিতে বড় জয় যুবাদের

বাংলাদেশ বিমানে নয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

একমাস পর বাড়ি ফিরেই খুন হলেন বিএনপি কর্মী

মাদককাণ্ডে নিষিদ্ধ প্রোটিয়া পেসার

আগে দেশের সংস্কার পরে নির্বাচন : চরমোনাই পীর

চাকরি ছাড়লেন সরকারি স্কুলের আরও ১২ সহকারী শিক্ষক

সোনার দামে আবারও বড় পতন

ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা ৩৫ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে আটক

ডোরার একক

১০

দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সবাই উচ্ছ্বসিত : মির্জা ফখরুল

১১

চলন্ত প্রাইভেটকারে গুলি ছোড়ে হাসান দাবি পুলিশের

১২

এক মণ ধানেও মিলছে না শ্রমিক

১৩

গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিলেন বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতা

১৪

অবশেষে রাজপরিবারে ফিরতে চাইলেন হ্যারি

১৫

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : কায়কোবাদ

১৬

কাজে আসছে না ৩৮ কোটি টাকার ভবন

১৭

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত আলবানিজ

১৮

১৪ জুন যেভাবে জন্মদিন উদযাপন করবেন ট্রাম্প

১৯

ডিএনসিসি এলাকায় যানজট নিরসনে কাজ করবে সরকারি চার সংস্থা 

২০
X