থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:১০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

দীর্ঘ ৯ মাস পর ঘরে ফিরলেন ১০ বম পরিবার

দীর্ঘ ৯ মাস পর নিজেদের পাড়ায় ফিরেছেন ১০টি বম পরিবারের সদস্যরা। ছবি : কালবেলা
দীর্ঘ ৯ মাস পর নিজেদের পাড়ায় ফিরেছেন ১০টি বম পরিবারের সদস্যরা। ছবি : কালবেলা

দীর্ঘ ৯ মাস পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় বান্দরবানের থানচি ও রুমা সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের বাকলাই বমপাড়ার ১০টি বম পরিবারের ২৬ জন সদস্য নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের সহায়তা ১৬ বেঙ্গলের তত্ত্বাবধানে রুমা উপজেলা রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বাকলাই বম পাড়ায় তারা ফিরে আসেন।

সরেজমিনে বাকলাই পাড়ায় ঘুরে দেখা গেছে, বম পরিবারের ঘরগুলো লতাপাতায় ঢেকে গেছে। খালি পড়ে আছে ঘরগুলো। কাঠের ঘরের বারান্দায় এলোমেলোভাবে পড়ে আছে কাপড়চোপড়। কারও কারও চোখে-মুখে ঘরে ফেরার আনন্দ; তবে এর ভেতরে চাপা আতঙ্ক ও ভয় ছাড়াও খাদ্যের অভাবের আশঙ্কা করেছেন তারা।

বম জনগোষ্ঠীরা জানান, গত বছরের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে গভীর রাতে আমাদের পাড়ায় (বাকলাই পাড়া) কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যরা প্রবেশ করে। হঠাৎ তারা পার্শ্ববর্তী বাকলাই সেনাক্যাম্প লক্ষ্য করে হামলা করে। আমরা (পাড়াবাসী) প্রাণভয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যাই। কয়েকদিন জঙ্গলে থাকার পর আশপাশের পাড়া মহল্লায় আশ্রয় নিয়ে কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে যাই। কেএনএফের হামলার দীর্ঘ ১০ মাস ভয়ে পালিয়ে থাকারা পর সেনাবাহিনীর সহায়তা নিজ পাড়ায় ফিরেছি আমরা।

নিজ বাড়িতে ফিরে ৭৫ বছর বয়সী ফিয়ারকিল বম বলেন, আমাদের পাড়ায় মোট ৪০টি পরিবার আছে। গত বছর মার্চ মাসে সবাই জঙ্গলে পালিয়ে যাই। শিশুসহ পরিবারের আট সদস্য নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। অনেকদিন ধারদেনা করে চলেছি। ঘরে রেখে যাওয়া সম্পদ, কাপড়, বই, হাঁড়িপাতিল, এমনকি বিশুদ্ধ পানি ব্যবস্থা সবই নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছরে জুম কাটতে না পারলে আরও শেষ হয়ে যাবে। সরকারি—বেসরকারি সহযোগিতা দিলে আমরা কোনো রকমে বাঁচতে পারব। এ ছাড়া সম্ভাব্য রাস্তা দেখছি না।

একই কথা জানালেন লালচংথাং বম। তিনি বলেন, হারানোর বেদনা এবং পালিয়ে থাকার বেদনা সবাইকে সমানভাবে স্পর্শ করবে না। আমরা সেনাবাহিনীকে কৃতজ্ঞতা জানাই, আমরা আবারও নিজ ঘরে ফিরতে পেরেছি।

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বাকলাই পাড়ায় সেনা সদস্যরা বিশুদ্ধ পানি ও পুষ্টিকর একবেলা খাবার দিয়ে সহযোগিতা করেছে। প্রয়োজনে আরও দেওয়া হবে। এলাকার শান্তি সুরক্ষা ও বসবাসের জন্য স্বাভাবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেবে সেনাবাহিনী।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেভেন রিংস সিমেন্টের ‘জেনে গড়ি, নিজের বাড়ি’ শীর্ষক সম্মেলন

ওসমানী হাসপাতালে ট্যাংকির ঢালাই ভেঙে কর্মী নিহত

জামিন পেলেন বাসদের সেই দুই নেতা

ঢাকা বিভাগেই থাকতে চান শরীয়তপুরবাসী

তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে সম্প্রীতির : সেলিমুজ্জামান

লালমনিরহাটে দুর্গাপূজার উদ্বোধন করলেন হাঙ্গেরি দূতাবাসের কনসাল 

চট্টগ্রামে এভারকেয়ার হাসপাতালে বিশ্ব হার্ট দিবস উদযাপন

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে জামায়াত নেতা খুন

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অচলাবস্থা নিরসনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগ

তারেক রহমান জানেন কীভাবে মানুষের কাছে যেতে হয় : মোস্তফা জামান

১০

স্থানীয় নাগরিক সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস আনোয়ারুজ্জামানের

১১

কেউ চাঁদাবাজি করলে তাকে পুলিশে দিন : শামা ওবায়েদ

১২

প্লাস্টিক কারখানাসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই

১৩

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যে ২০ দফা প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প

১৪

গাজার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হবেন ট্রাম্প!

১৫

নির্বাচনে কেন ‘বিলম্ব’, জানালেন অধ্যাপক ইউনূস

১৬

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ঘন ঘন বাংলাদেশে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

১৭

নেপালের কাছে সিরিজ হারের লজ্জায় ডুবলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

১৮

গাজা যুদ্ধ বন্ধে রাজি ইসরায়েল

১৯

অসুরকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনে পূজা পরিষদ ও পূজা কমিটির উদ্বেগ

২০
X