দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মেডিকেলে চান্স পেয়েছে মেয়ে, দুশ্চিন্তা কাটছে না দিনমজুর বাবার

মেধাবী শিক্ষার্থী কারিমা খাতুন ও তার পরিবার। ছবি : কালবেলা
মেধাবী শিক্ষার্থী কারিমা খাতুন ও তার পরিবার। ছবি : কালবেলা

দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী কারিমা খাতুন এবারের মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। কারিমা রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের আব্দুল করিম মন্ডলের মেয়ে। কারিমার এমন সাফল্যে এলাকাবাসীও অনেক খুশি।

জানা যায়, কারিমা খাতুন ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ৭৮ স্কোর নিয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। কারিমার মেরিট পজিশন ২১২৬। তিনি ২০২১ সালে দুর্গাপুর উপজেলা বেলঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২৩ সালে রাজশাহী শাহ মখদুম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ- ৫ পান তিনি।

কারিমার বাবা আব্দুল করিম মন্ডল বলেন, আমার দুটি সন্তান একটি মেয়ে, একটি ছেলে। ছেলেটি শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারে না। ছেলেটিও এইচএসসি পাস করেছে। আমি একজন দরিদ্র মানুষ দিন এনে দিন খাই। পরের জমিতে কামলা (কাজ করি) দেই। খুব কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়। তারপরও দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাতে কমতি রাখিনি।

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানি এবং আমার সন্তানদের শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। মেয়েটা আমার অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত এসেছে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। মেয়ে যেন বড় ডাক্তার হয়ে যেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে। তবে দুশ্চিন্তায় আছি তার লেখাপড়ার খরচ জোগাতে পারব কি না। তিনি সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছে সম্ভব হলে সহযোগিতা কামনা করেছেন।

মেধাবী শিক্ষার্থী কারিমা খাতুন বলেন, বাবা পেশায় দিনমজুর হলেও নিজে কখনও লজ্জাবোধ করি না। নিজেকে ছোট ভাবি না। কারণ বাবা সৎভাবে কাজ করে টাকা উপার্জন করে। আমরা দুই ভাইবোন। আমি ছোট, বড় ভাই আমার শারীরিক প্রতিবন্ধী ডিএমডি রোগে আক্রান্ত হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারে না। এই রোগের চিকিৎসা এখনো আসে নাই। তারপরও ভাই আমার প্রতিবন্ধী হয়েও লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা একই সঙ্গে লেখাপড়া করেছি সেও ২০২১ সালে এসএসসিতে ৪.৭৫ এবং এইচএসসি তে ৪.০০ জিপিএ পেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি একজন ভালো ডাক্তার হয়ে সবার পাশে থাকতে চাই। বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণ করতে চাই। প্রতিবন্ধী ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে চাই। আমার বড় ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল একজন ডাক্তার হবে এবং সে আমাকে সব সময় সাহস জোগাত, আজ আমি আল্লাহর রহমতে ভাইয়ের সাহসের জোগানোর কারণে এত দূরে আসতে পেরেছি।

নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজাদ রেজাউল করিম কালবেলাকে জানান, কারিমা মেডিকেলে চান্স পাওয়ার কারণে আমরা অনেক খুশি। কারিমা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। তার বাবা একজন দিনমজুর। মানুষের কাজ করে তার বাবা সংসার চালান এবং ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করান। আমরা এলাকাবাসী হিসেবে দোয়া করি কারিমা যেন বড় ডাক্তার হতে পারে এবং এলাকাবাসীসহ দেশবাসীর সেবা করতে পারেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাতিসংঘ পদক পেল বাংলাদেশ পুলিশের নারী কন্টিনজেন্ট

খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের সাক্ষাৎ

চার বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

প্রস্রাবের সুনামিতে ভেসে যাবে পাকিস্তান, বিলাওয়ালকে মিঠুন চক্রবর্তী

মৎস্যজীবী দলের সাবেক আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবের স্মরণসভা 

হোস্টেলে মেডিকেল ছাত্রীর লাশ, সুইসাইড নোটে যা লেখা

তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ নাহিদের

রাতের আঁধারে শত শত ট্রাকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে ‘সাদা পাথর’

সাভারে টিসিবির পণ্য চুরি, বিপুল মালামাল উদ্ধার

ভুয়া ‘থানা’ খুলে চাঁদাবাজি, ভারতে গ্রেপ্তার ৬ প্রতারক

১০

মেট্রো স্টেশনের নিচে ছিনতাইকারীর হামলা, পুলিশের এডিসি আহত

১১

চট্টগ্রামে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়ে হামলা

১২

নারায়ণগঞ্জে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৪

১৩

ষড়যন্ত্র রুখতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : টিপু

১৪

‘কোনো উপদেষ্টা দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে ছাড় দেবেন না প্রধান উপদেষ্টা’

১৫

আজিয়াটাকে বাংলাদেশে ৫জি সেবা সম্প্রসারণের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

১৬

ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর গেল কোথায়?

১৭

পদ দিয়ে একদিনেই সরানো হলো কেবিন ক্রু হাফসাকে  

১৮

ভারত থেকে আ.লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে : হাসনাত

১৯

বিশ্বের প্রথম মহাকাশ বিয়ে / বর ছিলেন মহাকাশে, কনে পৃথিবীতে

২০
X