বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
রাবিদ মাহমুদ চঞ্চল (আশাশুনি) সাতক্ষীরা
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন আশাশুনির মামুন 

মামুন হোসেন। ছবি : সংগৃহীত
মামুন হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার সন্তান মামুন হোসেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক ১৭তম বিজেএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে এ সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত হন।

মামুন হোসেন আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুরের সন্তান। কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে সংসার চালানো পিতা আব্দুল হাকিম মোল্যার ছোট ছেলে মামুন ভবিষ্যতে সহকারী জজের মতো ঈর্ষণীয় পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন, এমনটা অনেকেই ভাবতে পারেনি। মামুন ৬২ নং গদাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই মামুনের লেখাপড়ার প্রতি ছিল পরম আগ্রহ। আর্থিক টানাপড়েনের সংসারে পিতামাতা ছেলেকে জীবন সংগ্রামে যোগ্য করে গড়ে তুলতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি ভর্তি হন গদাইপুর জেহের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ২০১২ সালে তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.৯৪ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। এরপরই তার বাবা-মায়ের মামুনের উচ্চ শিক্ষা নিয়ে আগ্রহ বেড়ে যায়। শুরু হয় তাদের নতুন সংগ্রাম। নানা সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে ছেলেকে ভর্তি করান খান সাহেব কোমর উদ্দীন কলেজে। এই কলেজ থেকে মামুন ২০১৪ সালে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসিতে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। মামুনকে ঘিরে বাড়তে থাকে পরিবারের স্বপ্ন।

মামুনের স্কুল কলেজের শিক্ষক, পারিবারিক বন্ধু ও ঘনিষ্ঠদের পরামর্শে তার বাবা-মা সিদ্ধান্ত নেন ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন। বাবা-মা ও তার বড় ভাইয়ের সীমাহীন ত্যাগে মামুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-২০১৬ সেশনে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে আইন বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। এই বিশ্ববিদ্যালয় হতে এলএল.বি (অনার্স) ও এলএল.এম (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। এরপর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক আইনজীবী সনদপ্রাপ্ত হন এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকায় অ্যাডভোকেট হিসাবে আইনপেশায় যোগ দেন।

মামুন হোসেন বলেন, ‘২০১৬ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে আমি যখন ভর্তি হই তখন থেকেই বাবা, মা এবং একমাত্র ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল মামুন একদিন বিচারক হবে। সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। তাদের এই তীব্র ইচ্ছা এবং অক্লান্ত পরিশ্রম ছাত্রজীবন থেকে আমাকে বিচারক হতে অনুপ্রাণিত করেছে। তবে, পরপর ১৪, ১৫ ও ১৬তম বিজেএস পরীক্ষার ভাইবাতে আমি যখন অকৃতকার্য হতে থাকি তখন মা সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন, বুঝিয়েছেন ও সান্ত্বনা দিয়েছেন। অবশেষে মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে, ১৭তম বিজেএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে আল্লাহ আমার বাবা মায়ের স্বপ্নপূরণ করেছেন। আমার এই সাফল্যের জন্য আমার ছাত্রজীবনের সকল শিক্ষক, শুভাকাঙ্ক্ষী ও আত্মীয়স্বজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন, আমি যেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দেশমাতৃকার সেবা করতে পারি।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কী সিদ্ধান্ত নিলেন, জাতিকে জানান : রাশেদ খাঁন

জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিল ডিএমপি কমিশনারের প্রতিনিধি দল

দেশের আকাশে চক্কর দিয়ে গেল ভারতের তিনটি ড্রোন

দ্রুত ডাকসুর ঘোষণা না আসলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি শিবিরের

অগ্রণী ব্যাংক ও ব্রাকনেটের মধ্যে প্রযুক্তি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত

সচিবালয়ে প্রবেশে বাধা অনাকাঙ্ক্ষিত : ইউট্যাব

সাবেক ভূমিমন্ত্রীকে বাসায় পাঠিয়ে দিল পুলিশ

আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা চরমোনাই পীরের

আর কোনো তালবাহানা নয়, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে : খোকন

পুরোনো ভুল থেকে শিখতে চান লিটন

১০

নারীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের ঘটনায় মহিলা পরিষদের উদ্বেগ 

১১

সম্মেলন ছাড়াই লক্ষ্মীপুরে ছাত্রদলের ১০ কমিটি

১২

আলোচনা সভায় বক্তারা / ১০ মাসেও সরকারের মনের কথা বোঝা যাচ্ছে না

১৩

রাজশাহীতে পরিত্যক্ত ‘রকেট লঞ্চার’ উদ্ধার

১৪

সুব্রত বাইনকে গ্রেপ্তারের পর সেনা সদরের বার্তা

১৫

বগুড়ায় মিডিয়া কাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন শহীদ শিমুল একাদশ

১৬

সুব্রত বাইনের উত্থান কীভাবে

১৭

রাবিতে এটিএম আজহারের মুক্তির প্রতিবাদে বামপন্থি ছাত্রসংগঠনের মশাল মিছিলে হামলা

১৮

ভারতীয় পুশইনের ক্ষেত্রে নীরব অন্তর্বর্তী সরকার : ১২ দলীয় জোট

১৯

ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশে বক্তব্য দিতে পারেন খালেদা জিয়া

২০
X