আউশ ধান ঘরে তুলেই ওই জমিতে আবাদ করতে হবে আমন। এমন লক্ষ্য মাথায় রেখেই কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় চলতি মৌসুমের রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ওই অঞ্চলের কৃষকরা। আর কিছু দিন পরে মাঠ থেকে আউশ ধান উঠে আসার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠে মাঠে শুরু হবে কৃষকদের এসব রোপা আমন ধানের চারা রোপণের কাজ। তাই একটু আগে ভাগেই মাঠজুড়ে চলছে রোপা আমন ধানের বীজতলার জমি তৈরি ও বীজ বপনের কাজ।
গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে এই উপজেলার মাঠগুলোতে তেমন পানি না হওয়ায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বোরো, আউশ ও আমন ধান আবাদ করে আসছেন। এর মধ্যে আউশ ও রোপা আমন ধানের চাষনির্ভর করে প্রকৃতির ওপর।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় চলতি রোপা আমন মৌসুমের প্রায় ২৯০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বীজতলা তৈরি হতে পরে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হলেও গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে অনেক কৃষকের বীজতলা তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে না গেলে ওইসব বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে যাবে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার মাঠজুড়ে চলছে বীজতলার জন্য জমি তৈরি ও বীজ রোপণের কাজ। বর্তমানে এখানকার অধিকাংশ কৃষকরাই দেশীয় জাতের বদলে উন্নত উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের বীজ বপন করছেন।
উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের মালাপাড়া, চণ্ডিপুর, অলুয়া গ্রামের জুলফু মিয়া, মনির হোসেন, শানু মিয়াসহ আমন ধান চাষি কয়েকজন কৃষক বলেন, মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হওয়ায় অনেক কৃষকই আনন্দের সঙ্গে রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছে। তবে টানা বৃষ্টিতে নিচু জমির বীজতলার চারা গাছ ডুবে গেছে। যদিও নিয়মিত পানি নিষ্কাষণের মাধ্যমে বীজতলা রক্ষার চেষ্ট করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে ধানের চারা গজানোয় সমস্য হয়। এতে করে অর্থ ও শ্রম দুটিই নষ্ট হয়। তাই আবহাওয়ার প্রতি খেয়াল রেখেই বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছেন তারা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর এই অঞ্চলে অনেক জমিতেই রোপা আমন ধানের চাষ হবে বলে জানান চাষিরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল হাসান কালবেলাকে বলেন, এ উপজেলায় বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা। তবে অধিক বৃষ্টিপাত হলে চারা গজানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে বীজতলার সংকট সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে উঁচু স্থানে বীজতলা তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করার লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন