বয়স বেশি দেখিয়ে দুই শিশুর বিরুদ্ধে নরসিংদীর রায়পুরা থানায় মারামারি ও চুরির মামলা রুজু করায় মামলার বাদীকে শোকজ করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ওই দুই শিশুসহ তাদের মা নরসিংদী অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত এ শোকজের আদেশ প্রদান করেন। পাশাপাশি মায়ের জামিন মঞ্জুর ও শিশুদেরকে নারী ও শিশু আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। শিশু আদালতে হাজির হওয়ার পূর্বপর্যন্ত পুলিশ যেন তাদেরকে কোনো হয়রানি না করে এ ব্যাপারেও পুলিশকে নির্দেশনা দেয় আদালত।
রায়পুরা থানা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাহারখোলা গ্রামের মো. সামসুল হকের ছেলে আপন মিয়া (৩০) গত ১১ আগস্ট পূর্ব শত্রুতার জের থেকে দুই পক্ষের মারামারি হয়। সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে নারী শিশুসহ ১৯ জনকে নামসহ এবং অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে গত ১২ আগস্ট একটি মামলা দায়ের করা হয়।
বাদীর লিখিত অভিযোগে সূত্রে জানা যায়, আসামিরা গত ১১ আগস্ট একে অপরের পারস্পরিক যোগসাজসে বেআইনি ভাবে বাড়িতে প্রবেশ এবং হত্যার উদ্দেশ্য আক্রমণ করে তাদেরকে গুরত্বর জখম করে। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান জিনসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে বাদীর লিখিত অভিযোগটি গত ১২ আগষ্ট আমলে নিয়ে এজাহার হিসাবে গ্রহণ করে রায়পুরা থানা পুলিশ। মামলার এজহারে ১৬-১৭ নম্বর আসামির বয়স দেখানো হয়েছে ১৯ ও ২০ বছর। তবে জন্ম নিবন্ধন অনুসারে ১৬ নম্বর আসামি সিহাবের বয়স ৯ বছর এবং ১৭ নম্বর আসামি জুনায়েদের বয়স ১৩ বছর।
এলাকাবাসী জানায়, মামলার বাদী ও আসামিরা পরস্পর আত্মীয় ও একই বাড়িতে পাশাপাশি বসবাস করে। অসৎ উদ্দেশ্যে ও ইচ্ছাকৃতভাবে শিশু দুটিকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে রায়পুরা থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, যেহেতু মামলাটি তদন্তধীন আছে সেহেতু উল্লেখিত এই শিশুদেরকে এজাহার থেকে বাদ দেওয়া যাবে।
এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম বলেন, আসলে বয়স লিখতে গিয়ে টাইপিং মিস্টেক হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ইউনুস আলী জানান, শিশুদের মা শিশুকে নিয়ে আজ আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ বিচারক মাকে জামিন ও শিশুদের পরবর্তী ধার্য তারিখে শিশু আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। শিশু আদালতে হাজির না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ যেন কোনভাবেই এই শিশুদের হয়রানি না করেন এ ব্যাপারেও আদালত নির্দেশ প্রদান করেন। এ ছাড়া মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় এই মামলার বাদী আপন মিয়াকে শোকজ প্রদান করেন।
মন্তব্য করুন