দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে এক গৃহবধূকে (২২) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধূর বাবা মোস্তাফিজুর রহমান (৫৫) এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
শনিবার (২৬ আগস্ট) ভোর ৫টার দিকে মামলায় এজাহারভুক্ত এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার বেলওয়া গ্রামের মামনুর রশিদ পলিন (২৮), পলিনের মা শিরিন আক্তার (৫৫) ও একই উপজেলার উত্তর দেবীপুরের মিজানুর রহমান মিজান (৩০)।
মামলা এজাহার থেকে জানা যায়, অভিযুক্তদের মধ্যে পলিনের বাসা গৃহবধূর বাড়ির পাশাপাশি হওয়ায় পলিন ও তার মা গত ১৭ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টায় কৌশলে ওই গৃহবধূকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে অনেক খুঁজাখুঁজির পর বাদী তার স্ত্রীর কাছে শুনতে পায় তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মুক্তিপণ হিসাবে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে।
পরে অভিযুক্তদের ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। গত ২০ আগস্ট রাত ১১টায় অভিযুক্তরা ওই গৃহবধূকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের জখম থাকায় সাথে সাথে তাকে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ভর্তি করে পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় ও গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর বর্তমানে দ্বিতীয় স্বামীর সংসার করছে। প্রথম স্বামীর সংসারে তার একটি সন্তান রয়েছে। দ্বিতীয় স্বামীর সংসার করা অবস্থায় পুনরায় প্রথম স্বামীর কাছে গিয়ে বেশ কিছুদিন সংসার করেছেন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গৃহবধূর পরিবারকে সাথে নিয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে তাকে আবারও দ্বিতীয় স্বামীর হাতে তুলে দেয়।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর মামা মামিদুল ইসলাম বলেন, ‘আসামিরা আমার ভাগনিকে যখন আমাদের হাতে তুলে দেন, তখন তার শরীরে মারপিটের দাগ ছিল। তখন তার কাছে ঘটনা জানতে চাইলেও, সে ভয়ে কিছু বলছিল না। পরে আমি তাকে ২-৩টা চড় থাপ্পড় মারলে সে পুরো ঘটনা আমাদের খুলে বলে। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম রবিন বলেন, ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আমি তার কাছে পুরো বিষয়টি জানতে গিয়েছিলাম। তবে তখন সে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ করেননি। তাকে মারপিট করা ও খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করার কথা আমাকে জানিয়েছিলেন। যদি ঘটনার সত্যতা মিলে তবে আসামিদের কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভিকটিমক নারীকে পুলিশের হেফাজতে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিদেরও আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক থাকা অপর এক নারী আসামিকে গ্রেপ্তারে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
মন্তব্য করুন