দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে পাট চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। প্রখর রোদ, অনাবৃষ্টির কারণে এবার চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চাষিদের পোহাতে হয়েছে চরম ভোগান্তি ও কষ্ট। যার কারণে উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। কিন্তু বর্তমান বাজার মূল্য নিয়ে হতাশায় ভুগছেন পাট তারা । এ বছর তেল, সার, কীটনাশকের দাম ও শ্রমিক মজুরি বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে।
উপজেলার কৃষকরা জানান, গত বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবার পাট চাষ বেশি হয়েছে। প্রতি বিঘায় পাট চাষে কমপক্ষে ৯-১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন যদি ভালো হয় তাহলে প্রতি বিঘায় ৬-৭ মণ পাটের ফলন পাওয়া যায়। এত কিছুর পর যদি কাঙ্ক্ষিত দাম না মেলে তাহলে মাথায় হাত। তবে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ঋণ নিয়ে চাষ করা পাট চাষিরা।
পাটচাষি পৌরশহরের ঘাটপাড়ার লিটন মণ্ডল (৪০) হতাশ ও নির্বাক। এবার তিনি ৮ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। আশা করেছিলেন গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি দামে পাট বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু, বিধি বাম। শুরু দিকে দাম কিছুটা ভালো থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে। গত বছরের তুলনায় লিটন মণ্ডলকে কম দামে পাট বিক্রি করতে হয়েছে। গত বছর তিনি প্রতি মণ পাট বিক্রি করেছিলেন ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকা দরে। এ বছর পাট বিক্রি করতে হয়েছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে। তার মতো অন্য পাটচাষিরাও হতাশ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলায় পাটের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩০ হেক্টর। তবে চাষ হয়েছে ১২০ হেক্টর জমিতে। এসব জমি থেকে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে ১ হাজার ৪০ মণ।তবে উপজেলার বুলাকীপুর ও পালশা ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকায় পাটের চাষ বেশি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান জানান, সরকার পাট চাষ বৃদ্ধির জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও পাট অধিদপ্তর থেকে পাটচাষিদের নানা উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন। গত দুই বছর দাম ভালো হওয়ায় এবছর পাটচাষ বেশি হয়েছে। শুরু দিকে দাম ভালো হলেও বর্তমানে বাজারে পাটের দর কম। তবে পাটের দাম প্রতি মণ ৩ হাজার টাকার বেশি হলে কৃষকরা পাটচাষে আরও আগ্রহী হবেন। পাট সংরক্ষণ করে রাখলে পাটের দাম কিছু দিনের মধ্যে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন