চলতি বোরো মৌসুমে বর্ষা শুরুর আগেই মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলার তোড়জোড় চলছে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার কৃষকদের। একযোগে মাঠের ধান পেকে যাওয়ায় সবাই ধান কাটা শুরু করেছে। এতে তীব্র শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।এবার ধানের ফলনও হয়েছে খুবই ভালো। কিন্তু এক মণ ধানেও মিলছে না একজন শ্রমিক।
টানা বৃষ্টি শুরু হলে পাকা ধান ঘরে তুলতে ভোগান্তিতে পড়তে হবে এমন আশঙ্কায় রয়েছে এলাকার হাজার হাজার কৃষক। শ্রমিক সংকটের কারণে সময়মতো ধান ঘরে তুলতে পারছে না অনেকেই।
বৈশাখী ঝড়ের আগেই ক্ষেতের সোনালি ফসল ঘরে তুলতে মরিয়া কৃষকরা। ইতোমধ্যে মাঠের ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেছে। বর্তমানে আবহাওয়া ধান কাটার উপযোগী হয়ে যাওয়া ও একই সঙ্গে ধান পেকে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক মিলছে না। এমন অবস্থায় কদরও বেড়েছে শ্রমিকদের।
কয়দিন আগেও শ্রমিকের মূল্য ছিল ৭শ থেকে ৮শ টাকা। বর্তমানে একজন শ্রমিকের মজুরি হচ্ছে ১৩শ টাকা। কোনো কোনো বাজারে ১৪শ টাকাও হাঁকা হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে দুই বেলা খাবার ও চা-নাস্তা। অথচ তার বিপরীতে একমণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা।
উপজেলার কৃষক আব্দুস সোবাহান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বোরো ধানে লোকসান বেশি হবে।
কৃষকরা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ৪০ শতক জমিতে এবার বৈরী আবহাওয়া বৃষ্টি না হওয়া, সার, বীজের দাম বৃদ্ধি ও সেচ খরচ বেশি হওয়ায় ধান কাটা, মাড়াই করাসহ উৎপাদন খরচ এমনিতেই ২২-২৩ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
কৃষক আবদুল খালেক জানান, তার জমির ধান পেকে গেছে, কিন্তু এখন কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এখন শ্রমিকের দাম এমন যে, ৪০ শতক জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে আরও ৬ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
এবার ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। আবহাওয়া এমন ভালো থাকলে দানের সঙ্গে সবাই খড় (গো-খাদ্য) সংগ্রহ করতে পারবে।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষে ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। এবার উপজেলায় ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ২৫০ হেক্টর। ইতোমধ্যে মাঠের ধান কাটা শুরু হয়েছে। এখন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
শ্রমিক সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, একযোগে মাঠে ধান পেকে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। সব কৃষক ক্ষেত থেকে ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত হওয়ায় শ্রমিকের কদর বেড়েছে। তারা নিজেদের ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছে। তবে এ সংকট দ্রুত কেটে যাবে।
মন্তব্য করুন