দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মুক্তি পেতে যাচ্ছেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাজারো মানুষ। উপজেলার নতুন চৌপথি থেকে তারাগঞ্জ হাট হয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে প্রবেশের সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। ২০২৩ সালে তারাগঞ্জ হাটের মাঝ বরাবর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ অভিমুখী এক কিলোমিটার সড়কের প্রথম ধাপে ৪০০ মিটার রাস্তার আরসিসি ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়। তবে অসম্পন্ন থেকে যায় ৬০০ মিটার সড়ক।
ফলে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, স্থানীয়দের দৈনন্দিন চলাফেরা, তারাগঞ্জসহ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলার সিংহভাগ মানুষের ব্যবসায়ীক কর্মস্থল উপজেলার সর্বোচ্চ রাজস্ব আয়ের একমাত্র বড় বাজার তারাগঞ্জ হাটে যাতায়তে জনভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। পরে জনভোগান্তি রোধে জনস্বার্থে গত বছরের ১০ জুলাই ২০২৪ইং ‘সামান্য বৃষ্টিতে বেহালদশা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর চলতি বছরে ৯৪ লক্ষ ৫১ হাজার দুইশত পনেরো টাকা ব্যয়ে অগ্রণী ব্যাংক মোড়স্থ ২০০ মিটার সড়কের আরসিসি ঢালাই কাজ শুরু হয়।
জানা গেছে, মোট দুরত্বের অবশিষ্ট ৬০০ মিটারের মধ্যে সড়ক ও জনপদ রংপুরের অধীনে আংশিক ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণের কাজটি করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস কনস্ট্রাকশন। বাকি ৪০০ মিটারের কাজ সম্পন্ন হলে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহর ও বন্দরে শাকসবজি, কাঁচামাল, গরু, ছাগল, চাল/ডাল ইত্যাদি আমদানি রপ্তানিজাত বিভিন্ন সামগ্রী পরিবহন ও স্থানান্তর সহজ ও নিরাপদ হবে।
স্থানীয়রা বলেন, তারাগঞ্জ বাজার অগ্রণীব্যাংক মোড় থেকে কিশোরগঞ্জের সীমানা পর্যন্ত এই সড়কটুকু বর্ষাকালে সাগর হয়ে থাকত। অনেকেই সাগরের পাড় বলেও পরিচয় দিতো এই সড়কের। এবার আমাদের কপাল খুলেছে, আমাদের ভোগান্তি দূর হচ্ছে।
তারাগঞ্জ হাটের ব্যবসায়ী কিশোরগঞ্জের আতিকুল ইসলাম বলেন, একিনা করি রাস্তার কাম করলে কতদিন রাস্তার কাম শ্যাষ হইবে। ২০০ মিটার রাস্তার কাজ হবার পর, যেকনা রাস্তার কাজ বাকি থাকেচে, সেকনাও যেন তারাতারি হয়। ভাঙা রাস্তার জন্যে হামার তারাগঞ্জ হাটত এলা মানুষ আইসপারে চায় না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুবেলা রানা বলেন, কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর আমরা জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলি এবং সড়ক ও জনপদ রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দেই। বিষয়টি গুরত্বসহকারে দেখার পর ২০০ মিটারের কাজ শুরু হয়েছে। জনভোগান্তি রোধে সড়কটির কাজ হওয়ার ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশসহ আপনারও যথেষ্ট অবদান রয়েছে। সড়কের বাকি কাজটুকু সামনের অর্থবছরে সম্পন্ন হবে।
সড়ক ও জনপদ রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, দীর্ঘদিনের অবহেলিত সড়কটির কাজ ধাপে ধাপে করা হচ্ছে। আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ তুলনামূলক ব্যয়বহুল হওয়ায় একসাথে করা সম্ভব হয়নি। তবে চলিত অর্থবছর (জুন-২০২৫ইং) সড়কটির বাকি অংশটুকু একসাথে সম্পন্ন করা হবে। রক্ষণাবেক্ষণ বাজেট থেকে করা এই রাস্তার কাজ হচ্ছে, আশা করছি সামনের বরাদ্দেই সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হবে।
মন্তব্য করুন