ময়মনসিংহ ব্যুরো
প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৫, ০৯:৩০ এএম
আপডেট : ০৬ মে ২০২৫, ১০:৪৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ময়মনসিংহে ৬ থানার ওসিকে একযোগে বদলি

ময়মনসিংহ জেলার ছয় থানার ওসিকে বদলি। ছবি : সংগৃহীত
ময়মনসিংহ জেলার ছয় থানার ওসিকে বদলি। ছবি : সংগৃহীত

মাত্র একদিনের ব্যবধানে ময়মনসিংহ জেলার ছয় থানার ওসিকে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের সদর দপ্তর থেকে ‘জনস্বার্থে’ জারিকৃত আদেশে এই বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

সোমবার (০৫ মে) পুলিশ হেডকোয়ার্টারের অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) মো. মতিউর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত পৃথক দুইটি প্রজ্ঞাপনে ৪ ওসির বদলির আদেশ জারি করা হয়। এর আগেরদিন দুই ওসির বদলির আদেশের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

সোমবার জারি হওয়া আদেশ অনুযায়ী বদলিকৃত কর্মকর্তারা হলেন- কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম খান শফিক, গৌরীপুর থানার ওসি মির্জা মাজহারুল আনোয়ার, ভালুকা থানার ওসি মো. শামছুল হুদা খান, নান্দাইল থানার ওসি ফরিদ আহমেদ। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে এবং ফরিদ আহমেদকে রাজশাহী রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

এর আগে, গত রোববার (০৪ মে) অপর একটি প্রজ্ঞাপনে হালুয়াঘাট থানার ওসি আবুল খায়েরকে এপিবিএন এবং মুক্তাগাছা থানার ওসি মোহাম্মদ কামাল হোসেনকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়।

সোমবার রাতে এই ৬ ওসি বদলির বিষয়টি প্রকাশ হলে তাৎক্ষণিকভাবে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বদলিকৃত ওসিদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেন নেটিজেনরা। এ সময় অনেকে বদলির সিদ্ধান্তে ময়মনসিংহ রেঞ্জের নবনিযুক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আতাউল কিবরিয়া এবং জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলমের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, এই ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার বাণিজ্য, জুয়ার বোর্ড থেকে অর্থ আদায়, দালাল চক্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর মতো গুরুতর অভিযোগ ছিল। বেশ কয়েকজন ওসির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক মিডিয়ায় খবরের শিরোনাম হয়েছে। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে এবং পুলিশি সেবার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কয়েকজন ওসির কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়, যা পুলিশের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। জেলা পুলিশের পক্ষে সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছিল।

অভিযোগ রয়েছে, ভালুকা মডেল থানার ওসি মো. শামছুল হুদা খান ঘুষ বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকায় তার একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। গৌরীপুর থানার ওসি মির্জা মাজহারুল আনোয়ার বিগত সরকারের সময়ে সুবিধাভোগী হয়েও গত ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টে ফেলেন। তিনি নিজেকে সাবেক এক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠভাজন এবং একটি ছাত্র সংগঠনের সাবেক সক্রিয় কর্মী পরিচয়েও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।

এছাড়া হালুয়াঘাট থানার ওসি আবুল খায়ের বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দীর্ঘদিন তারাকান্দা থানার ওসি থাকা অবস্থায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের আস্থাভাজন হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ব্যাপক নির্যাতন করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রবি-আরতির বিচ্ছেদে বিপাকে কেনিশা

কোন পথে যাচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড?

কিশোরগঞ্জে ট্রাকচাপায় নিহত ২

‘ড. ইউনূস পদত্যাগ করবেন না’

আলিয়ার কানে আত্মপ্রকাশ, এয়ারপোর্টেই বাজিমাত

হাসপাতালে থাকতে হবে মির্জা ফখরুলকে

বার্সেলোনার জার্সিতেই ক্যারিয়ার শেষ করতে চান রাফিনিয়া

৪০ কোটি ডলারের ‘উপহার’ পেয়ে বিপাকে ট্রাম্প

পাইকগাছায় বিএনপি নেতাকে অব্যাহতি

গুজবে কান দেবেন না : সেনাবাহিনী

১০

নেত্রকোনায় পোস্টার লাগানো নিয়ে বিএনপির দলীয় কোন্দলে নিহত ১

১১

ড. ইউনূসের পদত্যাগ তার জন্য আত্মঘাতী হবে : ফরহাদ মজহার

১২

নিয়োগ দিতে না পেরে ঘুষ ফেরত দিলেন প্রধান শিক্ষক

১৩

জাতীয় দল নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই ভবিষ্যৎ দেখছেন সাকিব

১৪

স্কুলে নেই শৌচাগার, যেতে হয় অন্যের বাড়িতে

১৫

তিনটি গরু কিনলেই ওমরাহ্ ফ্রি 

১৬

দুর্বল হয়ে পড়েছে ইরানবিরোধী মার্কিন জোট 

১৭

নিজের প্রিয় গোল কোনটি জানালেন মেসি!

১৮

খেলাফত মজলিসের রাজনৈতিক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত

১৯

জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত রাতটি ছিল সবচেয়ে কঠিন : তাসনিম জারা

২০
X