প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ঘাড়ে চড়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন ছাত্র-জনতা পূরণ হতে দেবে না মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ক্ষমতায় যেতে চাইলে জনগণের ভাষা বুঝতে হবে। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলদারিত্ব ছেড়ে আসতে হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের তাঁবেদারি করে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে জনগণ কঠোরভাবে জবাব দেবে।
শনিবার (১০ মে) রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর ইউনিট কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন,
একটি দল জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী ছাত্র-জনতা রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চাইল, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাইল, গণহত্যার বিচার চাইল, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাইল, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার চাইল। কিন্তু ওই দল ছাত্র-জনতা যা চাইছে তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সারাক্ষণ নির্বাচন, নির্বাচন করছে! অথচ যেই ছাত্র-জনতার জীবন ও রক্তের বিনিময়ে কথা বলার, রাজনীতি করার অধিকার ফিরে পেয়েছে সেই ছাত্র-জনতার প্রতি সেই দলের কোনো দায়বদ্ধ দেখা যায় না।
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ৫ আগস্টের পর যখন দেশের সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়তে চাইছে তখনই ওই দল কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতি শুরু করেছে। ঐক্যের ফাটল ধরিয়ে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যখন রাজপথে দাঁড়াতে দেয়নি, তখন জামায়াতে ইসলামীসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা আর সমর্থনে রাজপথে আসতে হয়েছে। এখন তারা অতীত ভুলে গেছে।
গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের আগে নির্বাচন চাওয়ার কারণ ওই দলকে জাতির সামনে স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন চায়। তবে সেটি জনগণের আকাঙ্ক্ষার নির্বাচন হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার শেষ করে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন তারপর জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
জনগণ দাবি আদায় করে নিতে শিখে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণের চাওয়া-পাওয়ার বিপক্ষে গেলে পরিণতি আওয়ামী লীগের মতোই হবে।
দেরিতে হলেও অন্তবর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণায় বুলবুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা আছে যারা জনগণের প্রত্যাশা বুঝেও ইগনোর করে গেছে। তাদের চক্রান্তের কারণে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার আইন এখনও পাস হয়নি। ৯ মাসেও খুনিদের বিচার শুরু হয়নি। খুনিদের দোসরদের আইনের আওতায় আনা হয়নি। অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগের সদস্যদের গণহত্যার দায়ে বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বীরদের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর আমির হাফেজ গোলাম রাব্বানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বক্কর, সদর উপজেলা আমির হাফেজ আব্দুল আলীম।
মন্তব্য করুন