লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় সম্মান শ্রেণির (মাস্টার্স) পরীক্ষা দিতে গিয়ে ছেলে সন্তানের জন্ম দিলেন হাজেরা খাতুন নামে এক পরীক্ষার্থী।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি ছেলে সন্তান প্রসব করেন।
তিনি হাতীবান্ধা সরকারি আলীমুদ্দিন কলেজে ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় পরীক্ষা দেন।
হাজেরা খাতুন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়ানের চর বজরা গ্রামের আব্দূর রশিদের স্ত্রী। তিনি হাতীবান্ধা সরকারি আলীমুদ্দিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান শ্রেণির পরীক্ষার্থী।
হাসপাতাল ও পরীক্ষা কেন্দ্র জানায়, ৫ বছর সংসার জীবনে এক মেয়ে সন্তানের জননী হাজেরা খাতুন সংসারের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যান। স্বামীর বাড়িতে থেকেও সম্মান শ্রেণিতে পড়তেন। গর্ভে সন্তান নিয়ে মাস্টার্স সকল পরীক্ষা শেষে বুধবার ছিল ব্যবহারিক পরীক্ষা। স্বামীসহ অটোরিকশা যোগে বাড়ি থেকে হাতীবান্ধা সরকারি আলীমুদ্দিন কলেজ কেন্দ্র যাচ্ছিলেন হাজেরা খাতুন। কলেজ গেটে পৌঁছার পূর্বে হঠাৎ প্রসব বেদনায় ছটফট করলে ফোন দেন কলেজ কেন্দ্র সচিবকে। তিনি খবর পেয়ে তাকে দ্রুত হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পরামর্শ দেন।
অবশেষে তাকে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকদের তত্ত্ববধানে হাজেরা খাতুন ছেলে সন্তান প্রসব করেন। পরে পরীক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষকরা হাসপাতালে গিয়ে তার পরীক্ষা গ্রহণ করে নবজাতককে উপহার প্রদান করেন। পরে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে হাজেরা খাতুনের স্বামী আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের বিয়ে ৫ বছরের সংসারে একজন মেয়ে সন্তান রয়েছে। আজকে একজন ছেলে সন্তান পেয়েছি। কেন্দ্রে পৌঁছার পূর্বে প্রসব বেদনা শুরু করে পরীক্ষা কেন্দ্রে অবগত করে হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে হাজেরা ও সন্তান সুস্থ রয়েছে। তাদেরকে নিয়ে বাড়ি ফিরছি।
সরকারি আলীমুদ্দিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোজাম্মেল হক বলেন, কেন্দ্রে পৌঁছার পূর্বে প্রসব বেদনা উঠলে তারা আমাদের ফোনে অবগত করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছি। সন্তান প্রসব হলে হাসপাতালেই তার ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনারুল হক কালবেলাকে বলেন, নরমাল ডেলিভারি হলে হাজেরা খাতুন ছেলে সন্তান প্রসব করেন। বর্তমানে নবজাতক ও প্রসূতি দুজনে সুস্থ রয়েছেন। তাদেরকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন