‘রাতে ৩০ শতাংশ ভোট কেটে এমপি হয়েছেন তো। ধুনটের কোথাও রাস্তাঘাটের কোনো কাজ নেই, মানুষের দুর্দশার শেষ নেই। আর কয়দিন, সময় বেশি নেই, মাত্র দুই এক মাস, তারপর তুমি যা আমিও তা, বাতি জ্বালাও পান খাই।’
সম্প্রতি ১৫ আগস্টের শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নূরনবী তারিকের দেওয়া এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনার পর ধুনটে কদিন ধরে চলছে আওয়ামী লীগ নেতাদের ফেসবুক আইডিতে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত প্রমাণসহ ভিডিও প্রকাশের সমালোচনার ঝড়। এতে দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা দুশ্চিন্তা আর দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে দেওয়া বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নূরনবী তারিক বলেন, ‘রাতের আধারে ৩০ শতাংশ ভোট কেটে নেওয়া এমপির মাধ্যমে এ ধুনটের মাটিতে সরকারের উন্নয়ন হয়নি।’ এ বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সোমবার (২৮ আগস্ট) সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও নিয়ে বিভিন্ন চা স্টলে এবং সাধারণ মানুষের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। গত কয়েক দিন আগে চিকাশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলেপ বাদশার মাদক সেবন, উপজেলা যুগ্ম সম্পাদক মহসীন আলমের শোকের মাসে মদপান করে নারী নিয়ে নাচের ভিডিও এবং সবশেষ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি টিআইএম নূরনবী তারিকের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার বিপুল আহামেদ নামে ফেসবুক আইডিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নূরনবী তারিকের ১ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের ভিডিও বক্তব্য গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে আসে।
এর আগে রোববার (২৭ আগস্ট) রাতে বিপুল আহমেদ ও শাহিনুর আলম মিঠু নামের আলাদা দুটি ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক আইডি, ফেসবুক গ্রুপ ও ইউটিউবে দেখা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি টিআইএম নূরনবী তারিক বলেন, এক দু বছর আগের বক্তব্য এডিট করে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। এমপির লোকজন যতদিন থেকে ধুনটে রাজনীতি শুরু করেছে সেদিন থেকেই কাদা ছোড়াছুড়ি। আমার বক্তব্য নিয়ে সরকার ও সাধারণ নেতৃবৃন্দকে বিভ্রান্তিতে ফেলছে। বর্তমানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হেয় করার জন্য এটা করেছে। আমাদের দলের জন্য লজ্জাজনক। এ বিষয়ে দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে আমার বিরুদ্ধে এডিট করা ভিডিও ছেড়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যবস্থা করব।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান মজনু বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নূরনবী তারিকের এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। তবে অরাজনৈতিক ব্যক্তি দিয়ে ধুনটে আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীরা বিপদে। এ অপ্রচার ও ভিডিও এডিট করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কিছু হাইব্রিড ঢুকেছে। কোনো ব্যক্তির অপরাধের দায়ভার দল নেবে না। সঠিক তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন