জুলাই বিপ্লব বীরত্বের গল্প একসঙ্গে ভয়াবহ বেদনার গল্পও। জুলাই যোদ্ধারা গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সরকার তাদের এই অবদানের স্বীকৃতি দিতে জুলাই জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যেোগ নিয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) বিকাল ৪টায় কক্সবাজারের পেকুয়ায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ওয়াসিমের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তাফা সরোয়ার ফারুকী এ কথা বলেন। তিনি পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিমের বাড়িতে যান। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, জুলাই আন্দোলনের বীরত্ব এবং শোকগাথা। শহীদ ওয়াসিমের বাবার গল্প একরকম, আবার আরও হাজারো ওয়াসিমের গল্প অন্যরকম। তাদের স্মৃতি বাংলার মানুষের জন্য ধরে রাখতে সাংস্কৃতিক মন্ত্রাণালয় জুলাই জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের ষোলশহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শিক্ষার্থী ওয়াসিম আকরাম। ওয়াসিমের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার এবং স্থানীয়রা। মারা যাওয়ার ১০ মাস পরেও তার স্মৃতি আঁকড়ে কাঁদছে পরিবার।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার জুলাই আগস্ট স্মৃতি জাদুঘর করব। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জুলাইয়ের বীরত্বের গল্প এবং শোকগাথা সংরক্ষণ। যাতে ৫০ বছর পরে গিয়েও পরবর্তী প্রজন্ম জানতে পারে কি হয়েছিল, তারা যেন বুঝতে পারে কি করা যাবে, কি করা যাবে না। এতে আর কোনোদিন এরকম খুনির আবির্ভাব হবে না।
মূলত, জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরের স্মারক সংগ্রহের উদ্দেশ্যে জুলাই শহীদদের বাড়ি পরিদর্শনে যাচ্ছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা। আগামী এক থেকে দেড় মাস এ কার্যক্রম চলবে বলে জানান তিনি।
এদিন উপদেষ্টা চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের পেকুয়ায় শহীদ ওয়াসিম আকরামের গ্রামের বাড়ি পেকুয়া সদর ইউনিয়নে উত্তর মেহেরনামা তার মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি শহীদ ওয়াসিম আকরামের ব্যবহৃত টি-শার্ট ও বিভিন্ন জিনিসপত্র সংগ্রহ করেন।
এর আগে তিনি উপজেলা মিলনায়তনে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের মধ্যে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে আহত যোদ্ধাদের হাতে এক লাখ টাকা করে মোট ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেন উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।
সভায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন চৌধুরী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুর পেয়ারা বেগম।
মন্তব্য করুন