কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটগুলোতে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। প্রতিটি হাট পর্যাপ্ত দেশি জাতের কোরবানির পশুতে ভরে উঠেছে। তবে এসব হাটে ক্রেতাসমাগমের চেয়ে দর্শনার্থীদের সমাগম বেশি দেখা গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছেন, এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানি উপযোগী পর্যাপ্ত গবাদিপশু মজুদ রয়েছে। চাহিদার চেয়ে পশুর মজুদ বেশি। সে হিসেবে এবার কোরবানির পশুর সংকট হওয়ার কথা নয়।
রোববার (১ জুন) উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী সাহেবাবাদ স্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশি জাতের কোরবানি উপযোগী ছোট, মাঝারি ও বড় গরু আর ছাগলে হাট ভরে উঠেছে। পশু বিক্রেতারা এই উপজেলাসহ এসেছেন আশপাশের উপজেলা ও দূরদূরান্ত থেকে। হাটে উঠেছে গৃহস্থ ও খামারের গরু। পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে করে পশু নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। টুকটাক কেনাবেচাও চলছে। অধিকাংশ ক্রেতাই দাম জিজ্ঞেস করেই ছুটে যাচ্ছেন এক পশু থেকে অন্য পশুর কাছে। তবে উপস্থিত লোকসমাগমের বেশিরভাগই দর্শনার্থী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোরবানির পশু বেচাকেনা জমে উঠতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
হাটে কোরবানির পশু বিক্রি করতে এসেছেন মাঞ্জু মিয়া নামে এক গৃহস্থ। তার সাথে এসেছে তার দুই ছেলে। তারা দুটি ষাঁড় নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, আজই প্রথম বাজারে তুলেছি গরু দুটি। অনেকেই বাজার ঘুরে ঘুরে গরু দেখছে, দাম জিজ্ঞেস করছে কেউ কেউ। তবে বাজারে প্রকৃত ক্রেতার সংখ্যা কম।
আমজাদ হোসেন নামে এক পশু ব্যবসায়ী বলেন, হাটে ৪টি গরু নিয়ে এসেছি। কোরবানির পশুর হাট সবেমাত্র শুরু হলো, এখনো আশানুরূপ ক্রেতা নেই। অনেকেই বাজার ঘুরে দেখতে এসেছে। কেউ কেউ দাম জিজ্ঞেস করছে, তবে বোঝা যাচ্ছে তারা আইডিয়া করার জন্যই দাম জিজ্ঞেস করছে। বেচাকেনা এখনো জমেনি, আরও কয়েকদিন পর বেচাকেনা জমে উঠবে আশা করছি।
আবুল হাশেম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, এখানে আসার আগে উপজেলার দুলালপুর বাজারে গরু নিয়ে গিয়েছিলাম। অনেকে দর জিজ্ঞেস করেছে, তবে একটিও বিক্রি করতে পারিনি। আশা করছি, আরও কয়েকদিন গেলে পুরোদমে কেনাবেচা শুরু হবে।
ওমর ফারুক নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজার ঘুরে ১০-১২টা মাঝারি আকৃতির গরু দেখেছি। দামদরও করেছি। গরু ব্যবসায়ীরা এখন দাম বেশি চাচ্ছে। মনে হচ্ছে আরও কয়েকদিন গেলে কিনতে পারব।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, অন্য বারের তুলনায় এবার বাজারে কোরবানির পশু বেশি। বাজার জমেছে, তবে এখনো পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হয়নি। দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা আসছে। ক্রেতারা কোরবানির পশু না কিনলেও বাজার ঘুরে দেখছে। কোনো কোনো ক্রেতা দামদরও করছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইজমাল হাসান বলেন, এ বছর চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশুর মজুদ বেশি রয়েছে। কোরবানির পশুর আকস্মিক চিকিৎসার প্রয়োজন হলে বা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রতিটি হাটে আমাদের প্রতিনিধি রয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান বলেন, এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়কে যানজট নিরসনে ও কোরবানির পশুর হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। কোরবানির পশুর হাটে জালনোট শনাক্তের মেশিন বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের লোকজন পশুর হাটে অবস্থান করছে। উপজেলা প্রশাসন সার্বিক বিষয়ে তদারকি করছে।
মন্তব্য করুন