সিলেটের অপরূপ প্রকৃতি যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে পাহাড়, নদী আর চা-বাগানের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে হাজারো মানুষ ছুটে এসেছেন এখানে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের চা-বাগান থেকে শুরু করে জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, লালাখাল, লোভাছড়া, সাদা পাথর- সব পর্যটনকেন্দ্রেই দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়।
এবারের ১০ দিনের ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়ায় জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা জাফলং, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, বিছনাকান্দি, লালাখাল, মালনিছড়া চা বাগান, লাক্কাতুরা চা বাগান, শাহজালাল মাজার, শাহপরান মাজার, আলী আমজাদের ঘড়ি, কিন ব্রিজ, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, হামহাম জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা চা-বাগান, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য, চুনারুঘাটের পাথারিয়া পাহাড়, টাঙ্গুয়ার হাওর, জাদুকাটা নদী, বাইক্কাটিলা, নীলাদ্রি লেক (শহীদ সিরাজ লেক) দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে ছুটে এসেছেন পর্যটকরা।
রোববার (৮ জুন) বিকেলে সিলেটের লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুরসহ বিভিন্ন চা-বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। উঁচু-নিচু পাহাড়ের ঢেউ খেলানো সবুজের সমারোহে বিমোহিত পর্যটকরা।
কুমিল্লা থেকে আসা পর্যটক ফাহিমা আক্তার কালবেলাকে বলেন, এমন সৌন্দর্য শুধু ছবিতেই দেখেছি। বাস্তবে এসে অভিভূত হয়ে গেছি। এবার লম্বা ছুটি পেয়েছি। তীব্র গরমের মধ্যেও বিভিন্ন স্পট ঘুরেছি। বিশেষ সাদা পাথরে গোসল করে খুব ভালো লেগেছে। সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরব।
শাকিল নামে একজন বলেন, চা বাগানে আসলে আমার খুব ভালা লাগে। তীব্র গরমের মধ্যেই সকল পর্যটন কেন্দ্রের চেয়ে চা বাগান এসে খুব ভালো লেগেছে। ঈদের ছুটি পেয়ে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে চা বাগানে দীর্ঘ সময় আড্ডা দিলাম। সিলেটের চা বাগানগুলো খুব সুন্দর। সময় পেলে চা বাগানে ঘরেতে আসি।
সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানিগঞ্জ, জৈন্তাপুরে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, লালাখাল, লোভাছড়া, সাদা পাথরসহ সব জায়গায় উপচেপড়া ভিড়।
রংপুর থেকে আসা সোহেল আহমদ বলেন, সাদাপাথরের ধলাই নদীর শীতল জল স্পর্শ করে মনটা চাঙ্গা হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট ভালো থাকায় স্বল্প সময়ে আসতে পেরেছি। কিন্তু নৌকা ভাড়া একটু বেশি মনে হয়েছে।
ঢাকা থেকে জাফলংয়ে ঘুরতে আসা সোমা বলেন, আমাদের সব সময় ব্যস্ততায় দিন কাটে। ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে প্রকৃতির কাছে একটু ঘুরতে আসছি। গরম বেশি লাগলেও পানিতে ভিজে খুব ভালো লেগেছে।
জাফলংয়ে ঘুরতে আসা পার্থ বলেন, আমার বন্ধুদের সঙ্গে দীর্ঘ প্ল্যান করে ঈদের ছুটি পেয়ে ঘুরতে এসেছি। আসার পর তীব্র গরমেও আমরা খুব আনন্দ করেছি। পর্যটকদের জন্য ভালো কোনো ওয়াশ রুমের ব্যবস্থা নেই। তাই প্রশাসনকে অনুরোধ করব পর্যটকদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা রাখার।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং জোনের ওসি মো শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এবার পর্যটকদের ঢল নেমেছে। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন