সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা। প্রকৃতি ও সমুদ্রের টানে দূর-দূরান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসেন এখানে। ঈদের ছুটিতে সৈকত যেন হয়ে উঠেছে আনন্দ-উৎসবের মিলনমেলা। পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। কুয়াকাটা ফিরেছে তার নিজস্ব রূপে।
ঈদুল আজহার ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা ১০ দিনের ছুটি পেয়েছেন অনেকে। এ সুযোগে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা। আশানুরূপ পর্যটক থাকায় উচ্ছ্বসিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (৮ জুন) ঈদের দ্বিতীয় দিনে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ১৮ কিলোমিটারের সমুদ্র সৈকত। ঈদের দিন বিকেল থেকেই সৈকতে পর্যটকের আগমন ঘটেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আগত পর্যটকরা স্নিগ্ধ সৈকতে আনন্দ উল্লাসে মেতেছেন। অনেকে সমুদ্রের নোনা জলে গা ভাসিয়ে হই হুল্লোরে মেতেছেন। অনেকে প্রিয়জনকে নিয়ে সেলফি তুলে স্মৃতির পাতায় রেখে দিচ্ছেন। অনেকে সৈকতের বিভিন্ন বাহনে চরে একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত ঘুরে দেখছেন। কেউবা আবার বেঞ্চিতে বসে সমুদ্রের তীরে আছড়ে পড়া ঢেউসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
অনেকে স্পিডবোর্ট ও ঘোড়ায় চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সৈকতে। এ যেন সৈকতে বিরাজ করছে ঈদ উৎসবের আমেজ। এদিকে গঙ্গামতি, লেম্বুর বন, ঝাউবন ও শুঁটকি পল্লিসহ সকল পর্যটন স্পটে রয়েছে পর্যটকদের উচ্ছাসিত উপস্থিতি। আগতদের ভিড়ে বিক্রি বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ৫০ শতাংশ বুকিং রয়েছে অধিকাংশ হোটেল মোটেল। নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও রয়েছে সৈকত এলাকায়।
বরিশাল থেকে আসা পর্যটক মেহেরুন, সিয়াম দম্পতি জানান, ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুয়াকাটায় এসেছি। জায়গাটি বেশ সুন্দর। ঘুরতে এসে ভালো লাগছে।
খুলনা থেকে আসা পর্যটক মাহফুজা মৌ বলেন, ঈদের ছুটি উপভোগ করতে গতকাল রাতেই কুয়াকাটা এসেছি। কুয়াকাটার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখেছি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তসহ বিভিন্ন স্পটে ঘুরেছি। অনেক ভালো লেগেছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম বলেন, আজকে আমাদের হোটেল হোটেলেগুলোতে ৫০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। আগামীকাল থেকে ৮০ শতাংশ বুকিং থাকবে। ১০-১১ থেকে শতভাগ বুকিং আশা করছি।
কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার আমরা প্রস্তুত আছি। গোসলের সময় পর্যটকরা যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনার শিকার না হয় সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে। সার্বক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম সমুদ্র সৈকত এলাকায় অবস্থান করছে।
কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলো পোশাক পরিহিত ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রতিকার ঘটনা যাতে না ঘটে আমরা সতর্ক আছি।
মন্তব্য করুন